একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার মত প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা করতে চলতি সপ্তাহেই দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ১১জন সাংসদও বৈঠকে ছিলেন। বৈঠকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের পাওনা বাবদ প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকার বকেয়া তালিকা তুলে দিয়েছেন। সেই বৈঠকের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বাংলার কোষাগারে ৫ হাজার ৪৮৮ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দিল কেন্দ্র সরকার। যদিও রাজ্যের দাবি, এই টাকা কেন্দ্রের থেকে যে বকেয়া রয়েছে রাজ্যের তার অংশ নয়। এই টাকা দেওয়া হয়েছে করের অংশ হিসাবে। এটা রাজ্যের প্রাপ্যই ছিল।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্র সরকার দেশের রাজ্যগুলি থেকে যে কর পেয়েছে তারই অংশস্বরূপ এদিন ৭২ হাজার ৯৬১ কোটি ২১ লক্ষ টাকা রাজ্যগুলির কোষাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে। এর আগে দেশের রাজ্যগুলিকে করের ভাগ গত ১১ ডিসেম্বর দিয়েছিল কেন্দ্র। ফের দেবে ১০ জানুয়ারি। সেই হিসাবে এটা রুটিন প্রদেয় অর্থ হিসাবেই দেখা যায়।
এই বিষয়ে এদিন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘কর বাবদ রাজ্যের যে পাওনা, তার একটি অতিরিক্ত কিস্তি দিল। এর মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই।’ নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়কর-সহ অন্যান্য খাতে রাজ্যগুলি থেকে কেন্দ্র যা সংগ্রহ করে, তার একটি অংশ রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়। প্রতি মাসের ১০ তারিখের আশপাশে এই টাকা দেয় কেন্দ্র। তবে এবার নতুন বছর শুরু হওয়ার আগে এই টাকা অতিরিক্ত কিস্তি বাবদ দেওয়া হল। কর কাঠামোর টাকার কত অংশ রাজ্য পাবে, তা ঠিক করার অনেকগুলি মানদণ্ড রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জনসংখ্যা।
সেই অনুযায়ী যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ পেয়েছে ১৩ হাজার ৮৮ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিহার, ৭ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। তৃতীয় মধ্যপ্রদেশ, ৫ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য এই অতিরিক্ত কিস্তিতে পেয়েছে ৫ হাজার ৪৮৮ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাংলার শাসকদল যে যে বিষয়ে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছে, তার মধ্যে যেমন ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা রয়েছে, তেমনই রয়েছে জিএসটি বাবদ বকেয়া। তবে এই অর্থের সঙ্গে জিএসটি কাঠামোর কোনও সম্পর্ক নেই।