এসএসসি-সহ ১০টি মামলা থেকে সরল ডিভিশন বেঞ্চ

কলকাতা: শুনানির দিনই এসএসসি-সহ ১০টি মামলা থেকে সরে দাঁড়াল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এসএসসি মামলা ছাড়লেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্র সামন্ত। ব্যক্তিগত কারণেই মামলা ছাড়লেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন। মামলা ছাড়ার ব্যাপারে রবিবার রাতেই ইঙ্গিত মিলেছিল, যখন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন একটি নোটিস দিয়েছিলেন। নোটিসে তিনি এসএসসি সংক্রান্ত সমস্ত মামলাগুলিকে একটি লিস্টে রেখেছিলেন। মামলা চলাকালীন ডিভিশন বেঞ্চের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠে। এসএসসি-র মামলা অনলাইনে চলাকালীন এক আইনজীবী মন্তব্য করেন, ‘সমস্ত কিছু সেটিং হয়ে গিয়েছে’। পাশাপাশি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর হাত কোথাও বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। কারণ তিনি যখনও কোনও মামলায় সিবিআই নির্দেশ দিচ্ছেন, সেটিতে ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দিয়ে দিচ্ছে।

সোমবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসি-র ১০টি মামলার শুনানির কথা ছিল।শুনানির শুরুতেই বিচারপতি ট্যান্ডন জানিয়ে দেন তিনি আর এই মামলা শুনছেন না। শুধু তাই নয়, এ ছাড়াও গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা-সহ মোট ১০ টি মামলা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্র সামন্থের ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবার এসএসসি সংক্রান্ত মামলা বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির কথা থাকলেও, তা হচ্ছে না। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের মামলা থেকে সরে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, ‘গ্রুপ ডি, গ্রুপ ডি নাইন, টেন- এই মামলাগুলিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা আর শুনবে না।’

প্রসঙ্গত, এসএসসি- নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু প্রত্যেকবারই ডিভিশন বেঞ্চে খারিজ হয়ে যায় সেই নির্দেশ। বুধবার এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি সরব হয়েছিলেন, ‘কাদের সুবিধা পাইয়ে দিতে ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের হাত বেঁধে দিচ্ছে? দেশ দেখুক, বিচার করুক, যে বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়া নিয়ে কী চলছে।’ বিষয়টি তিনি তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে দেখার অনুরোধ করেছিলেন।

এসএসসি-র বিভিন্ন পদে নিয়োগ নিয়ে একাধিক মামলা চলছে। এ নিয়ে বারাবার আদালতের ভর্তসনার মুখে পড়তে হয়েছে এসএসসি-কে।শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র নিয়োগ সংক্রান্ত একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য। সেই কমিটির আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও বাকি চার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। তার পর শান্তিপ্রসাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। বাকিরা সিবিআই মুখোমুখি না হয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − six =