ফের সিএএ নিয়ে সওয়াল করতে দেখা গেল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে। ফের শাহের স্পষ্ট বার্তা, সিএএ হবেই। কেউ রুখতে পারবে না। সঙ্গে অমিত শাহের ঘোষণা, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বলবৎ হবে দেশে। পাশাপাশি শাহের কণ্ঠে উঠে এল লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ৩৭০ আসনের টার্গেট, এনডিএ-এর ৪০০ আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা সহ একাধিক বিষয়। বিরোধী জোট ইন্ডিয়াকে আক্রমণ করতে ছাড়লেন না অমিত শাহ।
সিএএ প্রসঙ্গে অমিত শাহ জানান, ‘সিএএ দেশের আইন। নির্বাচনের আগেই কার্যকর হবে এই আইন। কেউ আটকাতে পারবে না। সিএএ আইন নতুন কিছু নয়। কংগ্রেস ভোট ব্যাঙ্কের লোভে অনেক কিছুই ভুলে গিয়েছে। দেশ ভাগের সময় পাকিস্তান থেকে লাখ লাখ মানুষ ভারতে আসে। কংগ্রেস তখন তাদের শুধুই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল খুব তাড়াতাড়ি তাদের দেশ স্বাগত জানানো হবে। তবে কংগ্রেস ভোট ব্যাঙ্কের লোভে সবকিছু ভুলে গিয়েছে। দেশ যদি ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্টের প্রতিশ্রুতি মনে না রাখে, নাগরিকত্ব না দেয় তবে ওই মানুষগুলোর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হবে। আমাদের সরকার তাদের নাগরিকত্ব ও অধিকারও দেবে।’
একইসঙ্গে অমিত শাহ এদিন এও মনে করিয়ে দেন, ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে ধর্মের সঙ্গে যুক্ত করা ভুল। এটি কেবল বিজেপির নয়, গোটা দেশের বিষয়। সঙ্গে আক্ষেপের সুরে এও জানান, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে ধর্মের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি শুধু বিজেপির বিষয় নয়। সংবিধান পরিষদ অনুচ্ছেদ ৪৪-এর নির্দেশমূলক নীতিতে উল্লেখ রয়েছে যে দেশের সংসদ এবং রাজ্যগুলির বিধানসভাগুলিতে এটির বাস্তবায়ন হতে হবে।
ধর্মনিরপেক্ষ দেশ চাইলে ধর্মভিত্তিক কোনও আইন থাকা উচিত নয়। তাই সবার জন্য সমান আইন থাকা জরুরি।’ এরই রেশ ধরে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে বড় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার হিসেবে বর্ণনা করে অমিত শাহ বলেন, ‘কোনও দেশই আইনের ভিত্তিতে ধর্মনিরপেক্ষ নয়, এটা জনগণই নির্ধারণ করে। ধর্ম একটি ব্যক্তিগত বিষয়, রাষ্ট্রীয় বিষয় নয়। হাজার বছর ধরে আমরা এভাবেই রয়েছি।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য একটি আইন প্রয়োগ করতে হবে।’ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে সিএএ পাশ করায় নরেন্দ্র মোদি সরকার। ওই আইনানুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। সংসদের দু’কক্ষে পাশের পরে রাষ্ট্রপতিও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ সংক্রান্ত আইনের ধারা তৈরি হয়নি।