জলপাইগুড়ি, ৬ অক্টোবর: দুর্যোগের বুকে রাজনীতি! নাগরাকাটার দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে রক্তাক্ত হলেন বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা — মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক ড. শঙ্কর ঘোষ। বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়েই তাঁদের উপর চালানো হয় ভয়াবহ হামলা। মুহূর্তে উত্তপ্ত বামনডাঙা, আর নদীর পাড়ে ছড়িয়ে পড়ে রক্ত আর ভাঙা কাঁচের টুকরো।শঙ্কর ঘোষের অভিযোগ বিস্ফোরক — “আমরা দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাঠি, জুতো, আর নদীর পাথর নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।” তাঁর কথায়, “গাড়ির সিটের তলায় না লুকলে আজ হয়তো আমার মাথা ফেটে যেত।” খগেন মুর্মু আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন, তাঁর মাথা ফেটে যায় ইটের আঘাতে। ঘটনাস্থলে বিশৃঙ্খলার চিত্র ক্যামেরাবন্দি — রক্তে ভেসে যাওয়া সাংসদের শরীর, ভাঙচুর হওয়া গাড়ি, আর তছনছ ত্রাণ সামগ্রী।রাজনীতি উত্তপ্ত, পাল্টা বার্তা শুভেন্দুরএই নারকীয় হামলার পরই ফুঁসে উঠেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ — “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ভয় পেয়েছেন। ভয় দেখিয়ে বিজেপিকে আটকানো যাবে না।”
তাঁর বক্তব্য, “আপনার ভয় ও তোষণের রাজনীতি বাংলার জনগণের ঐক্য ও সাহসের কাছে পরাস্ত হবে।” রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর চরমে। বিজেপি বলছে, এটা নিছক এক রাজনৈতিক হামলা, প্রশাসনের প্রশ্রয়ে চালানো সন্ত্রাস। অন্যদিকে, তৃণমূলের দাবি, বিজেপি নেতারা পরিস্থিতি উসকে দিতে উস্কানিমূলক কাজ করেছিলেন। আহত দুই নেতাকে হাসপাতালে ভর্তিহামলার পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজনা সামলায়। খগেন মুর্মু ও শঙ্কর ঘোষকে উদ্ধার করে শিলিগুড়ির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাথায় চোটের কারণে নিবিড় পর্যবেক্ষণ চলছে। মানুষ বনাম রাজনীতিযেখানে এলাকার মানুষ বন্যার জলে ঘরবাড়ি হারিয়ে সাহায্যের আশায়, সেখানে রাজনীতির মারপ্যাঁচে রক্তপাত — এই বার্তা যেন আরও মর্মান্তিক। জনগণের জন্য পরিদর্শন নয়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হারানোর নোংরা খেলায় পরিণত হয়েছে দুর্যোগের মাটি। উত্তরবঙ্গে রক্তক্ষয়ী রাজনীতি যে নতুন মাত্রা ছুঁয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ত্রাণের জায়গায় ভেসে উঠেছে ক্ষমতার ছায়া, আর সেই ছায়ার নিচেই আহত হচ্ছে নেতারা — আর সঙ্গে সঙ্গে আহত হচ্ছে গোটা গণতন্ত্র। এই প্রতিবেদনটিকে কি আরও অনুসন্ধানমূলক (যেমন মাঠের সাক্ষাৎকার ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া সংযুক্ত করে) ধাঁচে লিখতে চান?

