ছোট্ট ফতিমাকে সাক্ষী রেখে নারী দিবসে ঝলমলে ‘সুপার মম’ বিসমাহ

গায়ে দেশের জার্সি, কোলে সন্তান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে নামার আগে বিসমাহ মারুফের এমন একটা ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছিল। এ বার ফের শিরোনামে চলে এলেন পাকিস্তানের মহিলা দলের অধিনায়ক। মাতৃত্বের পর প্রথম অর্ধ শতরান করলেন বিসমাহ। সেই অর্ধ শতরান উৎসর্গ করলেন ছয় মাসের একরত্তি কন্যা ফাতিমাকে।

কথায় বলে যে, ‘যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে’। বিসমাহ যেন তারই প্রতিচ্ছবি। একদিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশকে আর একদিকে সন্তানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সদ্য মা হওয়া বিসমাহ। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এমন বিশেষ দিনেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১২২ বলে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন তিনি। তবে এতে লাভ হল না। কারণ বাকিদের ব্যর্থতার জন্য সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া।

বিশ্বকাপে অর্ধ শতরানের স্টেডিয়ামে অন্যরকম মুহূর্তের জন্মদিলেন বিসমাহ। ছয় মাসের কন্যা ফাতিমার সামনেই অর্ধ শতরান করেন ছোট্ট ফাতিমার ‘সুপার মম’ বিসমাহ। ব্যক্তিগত মাইলস্টোন ছুঁয়েই সেটা নিজের সন্তানকে উৎসর্গ করলেন বিসমাহ। ঠিক সেই সময় ক্যামেরার সামনে ভেসে ওঠে ছোট্ট ফাতিমার মুখ। আঙুল তাক করে ফাতিমাও যেন মাকে কিছু বলতে চাইল। ছয় মাসের ছোট্ট ফাতিমাকে ঘিরে আবেগঘন হলো পুরো স্টেডিয়াম।

তবে ব্যক্তিগত মাইলস্টোন গড়লেও, চলতি মহিলা বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পারফরম্যান্স একেবারেই সন্তোষজনক নয়। ভারতের পর এ বার অজিদের কাছেও হেরে গেল পাকিস্তান। দুই ওপেনার সিদরা আমিন ও নাহিদা খান দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান। ব্যাট হাতে নির্ভরতা দিতে পারেননি মিডল অর্ডারের ওমাইমা সোহেল ও নিদা দার। আলিয়া রিয়াজকে সঙ্গে নিয়ে বিসমাহ পালটা লড়াই চালান বটে, তবে পাকিস্তানকে নিরাপদ লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে স্কোরবোর্ডে বড়সড় রান তুলতে না পারায় চলতি মহিলা বিশ্বকাপে ফের হারের মুখ দেখতে হয় পাকিস্তানকে।

ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে একপেশেভাবে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। এবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৯২ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে পরাজিত হন বিসমাহর দল। মাউন্ট মাউনগানুইয়ে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৯০ রান তোলে। জোড়া অর্ধ শতরান করেন বিসমাহ ও আলিয়া। যদিও তাঁরা কার্যত টেস্টের গতিতে রান সংগ্রহ করেন। আলিয়া ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১০৯ বলে ৫৩ রান করে আউট হন। মারুফ ৮টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১২২ বলে ৭৮ রান করে অপরাজিত থাকেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৩৪.৪ ওভারে ৩ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৩ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়। অ্যালিসা হিলি ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৭৯ বলে ৭২ রান করেন। রাচেল হেইনস ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৪ বলে ৩৪ রান করে মাঠ ছাড়েন। মেগ ল্যানিং ৩৫ রানের যোদগান রাখেন। এলিস পেরি ২৬ ও বেথ মুনি ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তানের হয়ে ২টি উইকেট নেন ওমাইমা। ১টি উইকেট নেন সান্ধু। ম্যাচের সেরা এলিসা হিলি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × four =