নিজস্ব প্রতিবেদন, বর্ধমান: আর কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্য লোকসভার ভোট। আর তার আগে বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন ও তৃণমূল সূত্রে খবর, সম্ভাব্য আগামী ২৪ জানুয়ারি বর্ধমানের গোদার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা। সভা থেকে তিনি প্রশাসনিক পরিষেবা প্রদান করার পাশাপাশি জেলার একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস ও বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলো জানা গিয়েছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি শাসক শিবিরের নেতা, মন্ত্রীরাও জোরদার তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন।
নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সভার খবর আসার পরেই সভাস্থলের মাঠ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। পাশাপাশি জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি দফায় দফায় বিভিন্ন দপ্তরকে নিয়ে বৈঠকও করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কী ভাবে অনুষ্ঠানটিকে সাজানো যায়, তা নিয়েও শলা পরামর্শ করা শুরু করে দিয়েছেন জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। একই ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লক্ষাধিক মানুষকে সমাবেত করতেও শাসক শিবির প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, ২৪ জানুয়ারি প্রশাসনিক সভা করতে মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানে আসছেন বলে বার্তা এসেছে। সেই সভাকে ঘিরে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রায় একবছর পরে মুখ্যমন্ত্রী ফের জেলায় আসছেন। তাঁকে দেখতে ও তাঁর কথা শোনার জন্য প্রচুর মানুষ গোদার মাঠে ভিড়ও করবেন। তাঁরা যাতে সুষ্ঠু ভাবে সভায় সমবেত হতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার পর দিন অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি কলকাতায় পুরমন্ত্রীর কাছে সশরীরে কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান সহ ১৭ জন কাউন্সিলরের হাজিরার ডাক প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, এমনই বার্তা এসেছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বর্ধমানে প্রশাসনিক সভার পর দিনই বৈঠকটি করা সম্ভব হবে না কি পিছিয়ে যাবে, সেই বিষয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার পরদিনই কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান সহ সকল কাউন্সিলরদের পুরমন্ত্রী কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছেন। তা নিয়ে কালনার রাজনৈতিক মহলেও জোর চর্চা শুরু হয়েছে । জানা গিয়েছে, কালনা পুরসভা তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে থাকলেও, চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তকে দলের বাাকি ১৬ জন কাউন্সিলর কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। এ নিয়ে অশান্তির জেরে মাঝে মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কালনা পুরসভা। যা দেখে উল্লাসে ফেটে পড়েন একমাত্র বিরোধী কাউন্সিলর। এখন চেয়ারম্যানের সঙ্গে কাউন্সিলরদের সংঘাতের মাত্রা আরও বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি। আনন্দ দত্তকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরাতে কাউন্সিলরদের সই করা অনাস্থাপত্র ইতিমধ্যেই মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে এই বিরোধের নিষ্পত্তি ঘটিয়ে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতেই পুরমন্ত্রীর তলব বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এ নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। তাদের দাবি, এতে গেরুয়া ঝড় ধেয়ে আসার দাপটের বার্তা পেয়ে ঘর গোছানোর মতো ব্যাপার। তবে লাভ কিছু হবে না। লোকসভা ভোটে গেরুয়া ঝড়ে এই বঙ্গের ঘাসফুল শিবির লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবেই।