সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ফের প্রতারণা। আর এই ঘটনায় নাম জড়াল এক পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারের। শুধু তাই নয়, এই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারও করা হয় কলকাতা পুলিশের এক এএসআই ও তাঁর স্ত্রী-সহ চার জনকে। বাকিরা হলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার এবং তৃণমূলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান তথা বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্যও।
এদিকে লালবাজার সূত্রে খবর, এই চার জনকে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয় বিভিন্ন জায়গা থেকে। লালবাজার সূত্রে খবর, গ্রেপ্তার হওয়া এএসআইয়ের নাম সঞ্জীব দেঁড়ে। তিনি বেনিয়াপুকুর থানায় কর্মরত ছিলেন। তারও আগে ছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগে। এর পাশাপাশি লালবাজারের প্রতারণা দমন শাখার আধিকারিকেরা তাঁর স্ত্রী বর্ণালী দেঁড়েকেও গ্রেপ্তার করেন। একইসঙ্গে হাওড়ার উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের খলিসানি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান ও বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্য বর্ণালী ও তাঁর স্বামী সঞ্জীবকে গোয়েন্দারা হাওড়ার বাউড়িয়ার বুড়িখালির একটি বহুতল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে গ্রেপ্তার করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সৈকত দে ওরফে টিটুকেও। তিনি গোয়েন্দা বিভাগের রিসেপশনে কর্মরত ছিলেন। ধৃত অপর জনের নাম কার্তিক মান্না। তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। এর পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে নেমে এও খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এই ঘটনায় লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তার অফিসের কেউ জড়িত আছে কি না সে ব্যাপারেও। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয় যে, এই ঘটনা সামনে আসে গত এপ্রিল মাসে। হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগে বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা আখতার বানু জানান, তাঁর ছেলেকে মন্ত্রীর কোটায় স্বাস্থ্য দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছেন অভিযুক্তেরা। এক পুলিশকর্তা জানান, সেই অভিযোগ মেলার পরেই সঞ্জীবের বিরুদ্ধে গোপনে তদন্ত শুরু হয়। তাতেই জানা যায়, ওই ঘটনায় জড়িত রয়েছেন গোয়েন্দা বিভাগের সিভিক ভলান্টিয়ার টিটুও। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সঞ্জীবের স্ত্রী বর্ণালীও এই চক্রের সদস্য।
তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তেরা স্বাস্থ্য দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন বিভিন্ন জনের কাছ থেকে। এমনকি, তাঁরা প্রতারিতদের স্বাস্থ্য দফতরের ভুয়ো কিছু নথিও দিয়েছিলেন। এমন কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশের সন্দেহ, ওই অভিযুক্তদের সঙ্গে আরও দু’-এক জন পুলিশকর্মীর যোগসাজশ থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই ডাকাতির অভিযোগে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র রক্ষী-সহ দুই কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করে লালবাজার। তার কিছু দিন পরেই ব্যারাকপুর কমিশনারেট প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের এসিপি পদমর্যাদার এক অফিসারকে।