পাঁচ বছর বাদে ফের লড়াইয়ের প্রস্তুতি। বিজেপির বঙ্গের জন্য প্রকাশিত দ্বিতীয় তালিকায় নাম রয়েছে অর্জুন সিং-এর। ব্যারাকপুর থেকে ফের একবার বিজেপির টিকিটে লোকসভা ভোটে লড়ছেন বিদায়ী সাংসদ। মাঝে অবশ্য একবার তৃণমূলে ফিরেছিলেন। আবার ভোটের মুখে তৃণমূল থেকে টিকিট না পেয়ে ফিরেও গিয়েছেন বিজেপিতে।
গত রবিবার রাতে বিজেপির প্রকাশিত প্রার্থী তালিকায় অর্জুন সিংয়ের নাম ঘোষণা হতে প্রচারে নামছেন তিনি। তবে তার আগে তৃণমূল নেতার বাবা থেকে বর্ষীয়ান বাম নেতা তড়িৎবরণ তোপদারের আশীর্বাদ নিলেন তিনি।
বারবার অর্জুন সিং দাবি করেছেন, তাঁর বাবার মৃত্যুর পর থেকেই তিনি তড়িৎবরণ তোপদারকেই অভিভাবক হিসেবে মানেন। তাই ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হবার আগেই তড়িৎবরণ তোপদারের বাড়ি গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিলেন বিদায়ী সাংসদ। সোমবার রাতে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তড়িৎবরণ তোপদারের ব্যারাকপুর মসজিদ মোড়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং বলেন, ‘অভিভাবকের আশীর্বাদ নিতে এসেছি। সফল হবার লক্ষে তাঁর আশীর্বাদ নিয়েই যুদ্ধে নামছি।’ বিদায়ী সাংসদের কথায়, ‘গতবারও ওনার আশীর্বাদ নিয়েছিলাম। এবারও ভোট যুদ্ধে নামার আগে আশীর্বাদ নিলাম।’ গতবারের চেয়ে বেশি মার্জিনে জেতার ব্যাপারে বিদায়ী সাংসদ আশাবাদী। অন্য দিকে, প্রাক্তন সাংসদ তথা বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তড়িৎবরণ তোপদার বলেন, ‘এটা সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার। রাস্তায় দেখা হলেই অর্জুন খোঁজ-খবর নেয় এবং তাঁকে প্রণামও করে। আগে থেকেই অর্জুন আসতো। তবে এবার তৃণমূল প্রার্থীও তাঁর কাছে এসেছেন। তবে কেউই রাজনীতি নিয়ে কথা বলেননি।’
তড়িৎবরণ তোপদারের পর কাঁকিনাড়া অঞ্চলের অতি পরিচিত বর্ষীয়ান ব্যক্তি ধনুষ ধারী পাণ্ডেরও আশীর্বাদ নেন ব্যারাকপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং। সম্পর্কে তিনি তৃনমূল নেতা প্রিয়াঙ্গু পাণ্ডের বাবা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই হোলি উৎসবে মাতোয়ারা মিনি ইন্ডিয়া খ্যাত মিশ্র ভাষাভাষীর ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। এদিন রঙের উৎসবে সামিল হলেন বিদায়ী সাংসদও। হোলি উৎসবের সকালেই আশীর্বাদ নিতে কাঁকিনাড়ার ৬ নম্বর গলিতে পূজারী ধনুষ ধারী পাণ্ডের বাড়িতে হাজির হলেন বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং। তবে প্রিয়াঙ্গুর স্ত্রী জ্যোতি পাণ্ডে ভাটপাড়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। প্রিয়াঙ্গুর বাড়িতে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের আগমন ঘিরে ইতিমধ্যেই জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রিয়াঙ্গু পাণ্ডে কি তাহলে ফুল বদল করতে চলেছেন, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। যদিও জল্পনা উস্কে দিয়ে প্রিয়াঙ্গু পাণ্ডে বলেন, ‘অপেক্ষা করুন। আগামীদিনে সবকিছু দেখতে পারবেন।’স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জ্যোতি ফাউন্ডেশনের কর্ণধার প্রিয়াঙ্গু পাণ্ডের কথায়, অর্জুন দা তাঁর অভিভাবক। অর্জুন দার হাত ধরেই তাঁর রাজনীতিতে প্রবেশ। উনি বাবার আশীর্বাদ নিতে এসেছিলেন। বাবা ওনাকে আশীর্বাদও করেছেন। বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং বলেন, ‘কাঁকিনাড়া অঞ্চলের অতি পরিচিত বিদ্বান ব্যক্তি বর্ষীয়ান ধনুষ ধারী পাণ্ডে। ওনার আশীর্বাদ নিলাম। সমাজে ওনার যথেষ্ট প্রভাব আছে। উনি বিশিষ্ট সমাজসেবী প্রিয়াঙ্গু পাণ্ডের পিতা। বিদায়ী সাংসদ জানান, প্রিয়াঙ্গু তাঁর ছোট ভাইয়ের মতো। যখন তিনি বিজেপিতে ছিলেন না। সেইসময় প্রিয়াঙ্গু কাঁকিনাড়ায় ভগবান রামের বড় পুজো করে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘ভোট যুদ্ধে চানক্যের প্রয়োজন আছে। প্রিয়াঙ্গু বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। এই যুদ্ধে ছোট ভাই প্রিয়াঙ্গু নিশ্চয়ই তাঁর সঙ্গেই থাকবে।’