নিজস্ব প্রতিবেদন, আসানসোল: মধ্যরাতে গোরু চুরির চেষ্টার অভিযোগ, তাও আবার চারচাকা গাড়ি নিয়ে এসে বিফল হয়ে পালাল চোরের দল। এহেন ভিডিও ভাইরাল হতেই এনিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা।
বিহার-ঝাড়খণ্ড হয়ে বাংলাদেশে গোরু পাচারের সেফ করিডর আসানসোল। এমনই অভিযোগ উঠছিল এতদিন। এবার অভিযোগ, আসানসোলই হয়ে উঠল গোরু চোরদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। একের পর এক গোরু শহরের খাটাল থেকে, গৃহস্থ বাড়ি থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, চোরদের হাত থেকে ছাড় পাচ্ছে না রাস্তায় বা বাজারে ঘুরতে থাকা মালিকবিহীন নিরীহ গোরুগুলিও। রাতের অন্ধকারে বলপূর্বক পিকআপ ভ্যানে চাপিয়ে গোরু চুরি করে হচ্ছে পাচার। সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ল এমনই দৃশ্য। ভাইরাল ভিডিওকে কেন্দ্র করে ফের শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘একদিন’ পত্রিকা।
শহর আসানসোলের প্রাণকেন্দ্র ইসমাইল। হীরাপুর থানা এলাকার আসানসোল পুরনিগমের ওয়ার্ড নম্বর ৮৪ এবং ৮৫ সংযোগকারী রাস্তার ওপরে গোরু চুরি ও পাচারের অভিযোগ সামনে এল শুক্রবার। বৃহস্পতিবার রাতে সিসি ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে সেই দৃশ্য। সিসি ক্যামেরায় দেখা যায় ইসমাইল গুরুনানক পল্লিতে মধ্যরাতে একটি পিকআপ ভ্যান এসে দাঁড়ায়। তারপর রাস্তায় ঘুরতে থাকা একটি নিরীহ গোরুকে সিংয়ে দড়ি বেঁধে, লেজ মুচড়ে বলপূর্বক পিকআপ ভ্যানে চাপানোর চেষ্টা চলছে। ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার পথে এই ঘটনা দেখে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দা তুষার মণ্ডল। তাঁর সন্দেহ হওয়ায় তিনি সামনে যেতেই গোরু চোরের দল পিকআপ ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায় বলে দাবি।
জানা গিয়েছে, চিৎকার চেঁচামেচি করতেই ছুটে আসেন স্থানীয় রাজা ঘোষ। ঘটনাটি ধরা পড়ে রাজা ঘোষের বাড়ির বাইরে থাকা সিসি ক্যামেরায়। ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী তথা জেলা সম্পাদক কাকলি ঘোষ অভিযোগ করেন, এই ঘটনার পিছনে শাসকদল, কাউন্সিলর সবাই যুক্ত রয়েছেন। খাটালের, রাস্তার গোরু, কেউই সুরক্ষিত নয়। এখন এই চোরেদের রাজত্বে মানুষও অসুরক্ষিত বলে তিনি অভিযোগ করেন। স্থানীয় খাটাল মালিক নন্দলাল যাদব অভিযোগ করেন, চারদিন আগেই তাঁর খাটাল থেকে গোরু চুরি হয়েছে। তাঁর সন্দেহ, এই চক্রই গোরু চুরি করে নিয়ে গিয়েছে।
গোরু চুরি মামলায় এতদিন আসানসোল সিবিআই আদালতে চলছিল অনুব্রত মণ্ডল, সেহেগল হোসেনদের শুনানি। শহর আসানসোলে আনাগোনা বেড়েছিল সিবিআই ও ইডির। সম্প্রতি সেই মামলা দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। এখন আর সিবিআই বা ইডির আনাগোনা নেই শিল্পশহরে। আর এই শিথিলতাকে কাজে লাগিয়েই ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে গোরু চুরি ও পাচার চক্র। এমনটাই অভিযোগ।