২০১৯ সালের অগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পর প্রথমবারের জন্য সেখানে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)।
জাতীয় পঞ্চায়েতি রাজ দিবসে জম্মুর সাম্বায় এক জনসভায় এদিন বক্তব্য রাখেন তিনি। সেই সঙ্গে মোদি পরিষ্কার করে দিলেন, উন্নয়নের বার্তা নিয়েই তিনি এসেছেন। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী এদিন ২০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এদিন সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে জম্মু বিমানবন্দর পৌঁছন। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপরাজ্যপাল-সহ উচ্চ আধিকারিক এবং বিজেপি নেতারা। সেখান থেকে তিনি চলে যান সাম্বায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপত্যকার তরুণরা আমার কথায় ভরসা রাখুন। আপনাদের পূর্বপুরুষদের যে সমস্যার মধ্যে দিয়ে জীবন কাটাতে হয়েছিল, আপনাদের জীবনকে তেমন হতে দেব না।’ গত ৮ বছর ধরে তিনি যে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ মন্ত্রকে পূর্ণ করতে আপ্রাণ কাজ করে চলেছেন সেকথাও বলেন মোদি।
জম্মু ও কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir) উন্নয়নের হার যে দ্রুত বাড়ছে সেকথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর গত সাত দশকে কাশ্মীরে বেসরকারি বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ১৭ হাজার কোটি টাকার। কিন্তু গত দু’বছরে সেই অঙ্কই পৌঁছে গিয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকায়। জম্মু ও কাশ্মীর উন্নয়নের নতুন কাহিনি লিখছে। আমরা বাবাসাহেব আম্বেদকরের স্বপ্নকে সত্যি করতে পেরেছি। উনি বলতেন, জম্মু ও কাশ্মীরের তরুণ সম্প্রদায় যেন চাকরির সবরকম সুযোগ পায়। আগে দিল্লি থেকে সরকারি ফাইল এখানে পৌঁছে ২-৩ সপ্তাহ লেগে যেত।’
এদিন রাতলে ও কোয়ার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ৮৫০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি কিশতওয়ার জেলার চেনাব নদীর উপর প্রায় ৫৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে। ৫৪০ মেগাওয়াট কোয়ার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি কিশতওয়ার জেলার চেনাব নদীর উপর ৪৫০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মিত হবে। দুটি প্রকল্পই এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে।এছাড়া ৩১০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মিত বানিহাল কাজীগুন্ড রোড টানেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। ৮.৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি বানিহাল এবং কাজীগুন্ডের মধ্যে রাস্তার দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার যাত্রার সময় প্রায় দেড় ঘণ্টা কমিয়ে দেবে।
এতদিন দেশের দুশোর বেশি আইন জম্মু ও কাশ্মীরে লাগু হত না। কিন্তু ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর সেই আইনগুলি লাগু হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, এর ফলে মহিলা থেকে দরিদ্র মানুষ, সকলেই সমান উপকৃত হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘গোটা দেশের কাছেই নতুন নিদর্শন তৈরি করছে কাশ্মীর।’