গ্যাংস্টার-রাজনীতিবিদ আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরফ হত্যাকাণ্ডে ধৃতদের জিজ্ঞাসবাদ করতেই সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, ‘বিখ্যাত হওয়ার লোভে’এই জোড়া খুন বলে পুলিশকে জানিয়েছে ধৃত তিন আততায়ী।
এদিকে শনিবার জোড়া খুনের কিছুক্ষণের মধ্যেই তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। রাতভর লাগাতার তাদের জিজ্ঞাসাদ করা হয়। আর তাতেই একাধিক বিস্ফোরক তথ্য মিলেছে বলে খবর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে যে, উত্তর প্রদেশ পুলিশের দাবি, ধৃত তিনজনের নামেই রাজ্যের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথা স্বীকার করেছে তারা। যোগী রাজ্যের পুলিশ সূত্রে খবর, লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদে একটা সময় ভেঙে পড়ে আততায়ীরা। রাতারাতি বিখ্যাত হওয়ার নেশা পেয়ে বসেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে তারা। আর সেই কারণই আতিক ও তার ভাইকে খুন করে বলে দাবি করেছে আততায়ীরা। যদিও এই যুক্তি মানতে রাজি নয় তদন্তকারীদের একাংশ। জোড়া খুনের নেপথ্যে অন্য ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র আততায়ীরা কোথা থেকে পেয়েছিল, তা নিয়েও চলছে তদন্ত। এদিকে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি মাসেই গুজরাতের অহমেদাবাদ থেকে আতিককে প্রয়াগরাজ জেলে নিয়ে আসা হয় আতিককে। যোগী রাজ্যের পুলিশ তাকে ‘ভুয়ো’ এনকাউন্টারে খতম করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিস্ফোরক দাবি করে এই গ্যাংস্টার। শেষ পর্যন্ত পুলিশি ঘেরা টোপেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ যায় আতিকের। এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন। পুলিশি হেপাজতে থাকাসত্ত্বেও কী ভাবে আতিক ও তার ভাই খুন হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পাশাপাশি, ঘটনার সময় আতিকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৭ জন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করেছে উত্তর প্রদেশ প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ঝাঁসি পুলিশি এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় আতিক পুত্র আসাদ-সহ মোট দুই দুষ্কৃতীর। শনিবারই আসাদকে সমাধিস্থ করা হয়। ছেলের শেষকৃত্য থাকতে চেয়েছিল গ্যাংস্টার আতিক। যদিও তার আবেদন কানেই তোলেনি উত্তর প্রদেশ প্রশাসন। আর সেই ব্যাপারেই হাসপাতালের সামনে মেডিক্যাল চেক আপের জন্য নামতেই আতিককে এই নিয়ে প্রশ্ন করে সংবাদ মাধ্যম। জবাব দিতে দিতে কিছুটা এগিয়ে যায় আতিক। তখনই ভিড়র মধ্যে থেকে তার মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায় আততায়ী। পরপর গুলি করা হয় আতিকের ভাইকেও। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। এরপরই আতিকের মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমকে জানান গ্যাংস্টারের আইনজীবী বিজয় মিশ্র। তাঁর দাবি, ভিড়ের মধ্যে থেকে আতিককে লক্ষ্য করে গুলি চালায় আততায়ী। তবে ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি আইনজীবী মিশ্র।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবের দলের সাংসদ ছিলেন আতিক। অপহরণ মামলায় তাকে যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছিল আদালত।