মালদা: শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় আদিবাসী এক তরুণীকে পেটে লাথি মেরে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠল নার্সিংহোমের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। পুরাতন মালদা থানার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডিস্কোমোড় এলাকার ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার দুপুর থেকে সরগরম হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। নার্সিংহোমের হাউসকিপিং স্টাফ ওই আদিবাসী তরুণীর পেটের যন্ত্রণা নিয়েই এদিন মালদা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। আহত ২৫ বছর বয়সি আদিবাসী তরুণীর বাড়ি হবিবপুর এলাকায়।
এদিকে এদিন আহত ওই আদিবাসী তরুণীর পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হন ওই নার্সিংহোমের অন্যান্য সহকর্মী থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার গোটা আদিবাসী সমাজ। মুহূর্তের মধ্যেই এদিন দুপুর থেকে পুরাতন মালদা থানার সাহাপুর ডিস্কোমোড় এলাকার মালদা – নালাগোলা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে দেয় আদিবাসীরা। ধামসা, মাদল বাজিয়ে তীর – ধনুক, লাঠি নিয়ে শুরু হয় আদিবাসীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুরাতন মালদা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের এক চিকিৎসকের এমন অত্যাচারের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা। ওই নার্সিংহোমের এক মহিলা কর্মী রেখা হেমব্রম জানিয়েছেন, তাদের এক সহকর্মী হাউজ কিপিং স্টাফকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছেন এক চিকিৎসক। ওই চিকিৎসক মাঝেমধ্যেই নার্সিংহোমের মহিলা হাউস কিসপিং স্টাফদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, গায়ে হাত দেয়। তার প্রতিবাদ করাতেই ওই আদিবাসী তরুণীকে মারধর করা হয়। অসুস্থ অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। এরপর এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েই নার্সিংহোমের সামনেই অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত না ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার হচ্ছে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।
মালদার আদিবাসী নেতা মিঠুন সোরেন বলেন, পেটের দায়ে মহিলারা কাজ করেন, আর তার সুযোগ নিয়ে মারধর করা হবে এটা কোনওভাবে বরদাস্ত করা যাবে না। আমাদের সম্প্রদায়ের এক তরুণীর গায়ে হাত তোলা হয়েছে। সাহাপুর এলাকার এক নার্সিংহোমের চিকিৎসক এই অত্যাচার চালিয়েছে। তার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছি। পুলিশকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। অবিলম্বে ওই চিকিৎসক গ্রেপ্তারের দাবি করা হয়েছে। সাহাপুর এলাকার ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের এইচআর ইন্দ্রানী রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, ঘটনাটা কখন ঘটেছে কিছুই জানি না। নার্সিংহোমে যে জায়গায় ওই হাউসকিপিং স্টাপকে মারধর করার কথা বলা হচ্ছে, সেখানকার সিসি ক্যামেরাও নেই। ফলে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না। পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতনও কর্তৃপক্ষ দেখছে।পুরাতন মালদা থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।