কলকাতা: সেদিনও ছিল শনিবার। আশ্চর্যজনক ভাবে এদিনও শনিবার। ব্যবধান সাত দিনের। তার মধ্যেই ফের বড়সড় অগ্নিকাণ্ড ট্যাংরায়। শনিবার সন্ধেয় ভয়াবহ আগুন লাগে ট্যাংরার মেহের আলি লেনের চামড়ার কারখানায়। দাহ্য পদার্থ থাকায় মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। আশপাশে জনবসতি থাকায় আতঙ্কে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
দমকল সূত্রে পাওয়া খবরে, ঘটনাস্থলে কাজ করছে দমকলের ১৫ টি ইঞ্জিন। দু’জন দমকলকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও ৫টি ইঞ্জিন আনা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় আগুন নেভাতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন দমকলকর্মীরা। চামড়ার কারখানায় আগুনের শিখা কয়েক ফুট পর্যন্ত উঁচুতে উঠে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ চামড়ার কারখানাটিতে আগুন লাগে। আগুন লাগার কিছু সময়ের মধ্যে সংলগ্ন ঘন বসতিপূর্ণ বস্তি এলাকা ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। আগুনের ধোঁয়ায় এলাকার বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
দমকলকর্মীরা oুত আশপাশের বাড়ি খালি করে দেন। জল দিয়ে আশপাশের ঘরবাড়িও ঠান্ডা রাখা হচ্ছে যাতে আগুন না ছড়িয়ে পড়তে পারে। জানা গিয়েছে, আগুনের লেলিহান শিখায় গুদামের দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেক মানুষকে এলাকা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ট্যাংরার এই গুদামে আগুন কীভাবে লাগল তা এখনও স্পষ্ট নয়। রাত ন’টা পর্যন্ত আগুন জ্বলছে ভীষণভাবে। দমকলমন্ত্রী জানান, এলাকা ঘিঞ্জি ও রাস্তা সরু হওয়ায় দমকলকর্মীদের কাজে অসুবিধে হয়। তবে সবরকমভাবে চেষ্টা করছে দমকল। পরিস্থিতির ওপর নজর রয়েছে।
এদিকে আগুন লাগলেও দমকল দেরিতে পৌঁছয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসি¨াদের একাংশের। যদিও তা মানতে চায়নি দমকল দফতর। প্রশ্ন উঠছে গুদামের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিয়েও। এই এলাকায় যে গুদাম ও কারখানাগুলি রয়েছে, সেগুলি অত্যন্ত পুরানো। ফলে, অনেকক্ষেত্রেই এই সব গুদাম ও কারখানাগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকে না। এ প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘আমার মনে হয় দমকলের অডিট হওয়া উচিত। যাঁরা অডিট করাবে না, তাদের নতুন করে আইন করে তাদের শাটডাউন নোটিস যাতে দমকল দিতে পারে, তার ব্যবস্থা হওয়া উচিত। তবে আমি দমকলমন্ত্রী নই, এটি আমার ব্যক্তিগত মতামত।’
এই ট্যাংরাতেই গত সপ্তাহের শনিবার সকালে ভয়াবহ আগুন লেগেছিল প্লাস্টিক কারখানায়। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় দমকলের সাতটি ইঞ্জিন সেই আগুন নেভায়। তার আগেই অবশ্য কারখানার অনেকটা পুড়ে গিয়েছিল। ট্যাংরায় একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে প্রশ্ন উঠেছে পুরসভা ও দমকলের ভূমিকা নিয়েও।