দুর্গাপুর: দুর্গাপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বরফকল এলাকায় সোমবার পরকিয়া সম্পর্ক সন্দেহে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় মৃত্যু হয় স্ত্রীর। মৃতার নাম নুরি পারভিন।
পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ স্বীকার করে নেয় অভিযুক্ত স্বামী মহম্মদ আকিল। তাঁর দাবি, স্ত্রী অন্য পুরুষের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছিল। একাধিকবার বুঝিয়ে অনুরোধ করা সত্ত্বেও সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেনি। দুর্গাপুর থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিএমইআরআই বাস স্ট্যান্ড বস্তিতে নুরিদেবী তাঁর ৯ ও ১৪ বছর বয়সের দুই কন্যসন্তানকে নিয়ে বাবা মায়ের সঙ্গে নিজের বাপেরবাড়িতে বসবাস করতেন। আকিল সেখানে ঘরজামাই থাকত। সে পেশায় চারচাকা গাড়ির চালক। তাদের মধ্যে নিত্যদিন অশান্তি লেগেই থাকত। মৃতার বড় মেয়ে আসমা পারভিন জানায়, বাবা প্রায়দিনই মায়ের ওপর অত্যাচার চালাত। আগের দিন রাতেও বাবা বাড়িতে এসে মাকে মারধর করে। আমি আটকাতে গেলে আমাকেও মারধর করে। আমি সেই কথা দাদুকে গিয়ে বললে দাদু এসে মাকে বাঁচায়। তারপর আমরা বাবার ভয়ে সারারাত দাদুর ঘরেই ছিলাম। এরপর সকালে স্কুল যাওয়ার সময় মা আমাদের স্কুলে পৌঁছে দিতে গেলে বাবা মাকে বাধা দেয়। বাবা আমাদের স্কুলে নিয়ে যেতে চায়। এই নিয়ে মা- বাবার মধ্যে বচসা বাঁধে। বাবা হঠাৎ মাকে নিয়ে একটি ঘরে ঢুকে দরজা ভেতর থেকে লাগিয়ে দিয়ে মারধর শুরু করে। আমরা দরজা খুলতে বললেও খোলেনি। এরপর বাবা একটা ওড়না দিয়ে মায়ের গলায় পেঁচিয়ে মাকে মেরে ফেলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দুর্গাপুর থানার পুলিশ। পুলিশ এসে নুরিদেবীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
বাবার চরম শাস্তির দাবি করে বড় মেয়ে আসমা। এলাকাবাসী জানায়, আকিলের স্ত্রীর অন্য পুরুষের সঙ্গে পরকিয়ার সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া অশান্তি হত। এই ঘটনার জেরে কিছুদিন আগে বাড়িতে পুলিশও আসে। তবে পুলিশের উপস্থিতিতে তখন সব মিটমাট হয়ে যায়। আকিলের সন্দেহ ছিল তার স্ত্রী মেয়েদের স্কুলে ছেড়ে ওই পুরুষের সঙ্গে অবৈধভাবে দেখা করতে যায়। তাই সে নিজেই মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যেতে চায়। তার স্ত্রী এতে আপত্তি করায় রাগের মাথায় নুরি পারভিনকে খুন করে বলে দাবি আকিলের। পুলিশের কাছে এই সম্পূর্ণ ঘটনার কথা স্বীকার করে মহম্মদ আকিল। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।