বুমরাহর পাল্টা জবাব কামিন্স-রাসেল, মুম্বইকে হারিয়ে প্লে অফের আশা জিইয়ে রাখল কেকেআর

বুমরাহর পাল্টা জবাব কামিন্স, রাসেল। সোমবার ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে বড় ব্যবধানে হারাল কেকেআর। ৫২ রানে। ১৭.৩ ওভারে। প্রথমার্ধে কেকেআরের ইনিংস শেষ হওয়ার পর দেখে মনে হয়েছিল এই রান তাড়া করা খুব একটা কষ্টের হবে না মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের জন্য। বিশেষ করে বল হাতে বুমরাহ যে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন, তাতে মুম্বই ঝাঁপিয়ে পড়বে কেকেআরের ওপর সেটা আশা করা গিয়েছিল।

একটা দলের তাগিদ কেবল সম্মানরক্ষার। আর একটা দলের কাছে জীবনমরণ লড়াই। এমন দুই দল মুখোমুখি হলে, উত্তেজনার পারদ চড়াই স্বাভাবিক। প্রথমটি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং পরেরটি কলকাতা নাইট রাইডার্স। আর মাঠে বল গড়াতে সেই উত্তেজনা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিলেন জশপ্রীত বুমরাহ। তাঁর ঝোড়ো পেসের সাক্ষী থাকল ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়াম। কিন্তু বুমবুম বুমরাহর অনবদ্য রেকর্ডের দিনও জয়ের মুখ দেখা হল না মুম্বইয়ের। দলে একঝাঁক বদল ঘটিয়েই রোহিত শর্মাদের দুরমুশ করলেন শ্রেয়স আইয়ার। আর সেই সঙ্গে আরও একবার উজ্জ্বল হল কেকেআরের প্লে অফে পৌঁছনোর আশা।

দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে নিজেদের সবটুকু উজার করে দিতে হয়। এদিন কেকেআরের প্রথম একাদশ যেন সে কথাই মনে করিয়ে দিল। এক-দুটো নয়, পাঁচটা বদল এনেছিলেন শ্রেয়স। অ্যারন ফিঞ্চ, শিবম মাভি, হর্ষিত রানা, অনুকূল রায় ও বাবা ইন্দ্রজিৎকে বসিয়ে এদিন দলে ফেরানো হয় রাহানে, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, প্যাট কামিন্স, বরুণ চক্রবর্তী এবং শেলডন জ্যাকসনকে। লাগাতার খারাপ পারফর্ম করলেও এদিন দলে সুযোগ পেয়ে ছন্দে ফিরলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। ৪৩ রানের মূল্যবান ইনিংশ খেলেন নাইট ওপেনার। ২৫ রানে রাহানে ফিরলে ৪৩ রান করেন নীতীশ রানাও। তবে কেকেআরের মিডল অর্ডারকে কার্যত খুবলে খেলেন বুমরাহ।

আইপিএলে প্রথমবার এক ম্যাচে পাঁচটি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়লেন তিনি। গত ১০ ম্যাচে যেখানে মোট ৫ উইকেট তুলেছিলেন, সেখানে এদিন মাত্র ১০ রান দিয়েই সেই সংখ্যক উইকেট ঝুলিতে ভরে ফেললেন। এর আগে ১২ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির ছিল ইশান্ত শর্মার। তবে স্পিনার হিসেবে অনিল কুম্বলের ঝুলিতে রয়েছে আইপিএলে ৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড।

বুমরাহর দুরন্ত পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত হয়ে টুইট করেন তাঁর স্ত্রী সঞ্জনা গণেশন। লেখেন, তাঁর স্বামী যেন মাঠে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। বুমরাহকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রীও। কিন্তু এরপরও আক্ষেপ রয়েই গেল। এমন রেকর্ড গড়ার দিনও যে কেকেআরকে হারানো গেল না। অথচ এই নাইটদেরই সবচেয়ে বড় গাঁট মুম্বই ইন্ডিয়ান্সই। কিন্তু এদিন শ্রেয়সের নেতৃত্বে হেসে-খেলেই এল জয়। যদিও রোহিত শর্মার আউট নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। ব্যাটে বল লাগার আগেই ‘স্পাইক’ হয়েছিল। পরে আরও বড় ‘স্পাইক’ ধরা পড়ে। ফলে ব্যাটে আদৌ বল লেগেছিল কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ। অনেকে দাবি, ব্যাট ও বলের মধ্যে ফাঁক ছিল। তা সত্ত্বেও রিভিউতে রোহিতকে আউট দেওয়া হয়। তবে বিতর্ক যাই হোক না কেন, দিনের শেষে দুটি মূল্যবান পয়েন্ট ঘরে তুলে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ল কিং খানের দল। আর উলটোদিকে লাস্ট বয় তকমা ঘোচাতে ব্যর্থ ‘শর্মাজি’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − four =