মিলন গোস্বামী
ভোটের আগে বিজেপি বিরোধীদের ভয় দেখানোর খেলা খেলছে। ওরা গণতন্ত্রকে জেলখানায় ভরে দিয়েছেন। নাম না করে তারাপীঠে নির্বাচনী জনসভায় মোদিকে এভাবেই নিশানা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বীরভূমের হাঁসনে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে জনসভায় এসে তিনি বলেন, ‘বিজেপি ঘাবড়ে গিয়েছে, ভয় পেয়ে গিয়েছে। ওরা ভাগাভাগি করতে চায় তাই ভেদাভেদের কথা বলে বেড়াচ্ছে’।
ওরা ভয় পেয়েছে বলেই ভোটের আগে এনআরসি, সিএএ -র খেলা চলছে, ইউনিফর্ম সিভিল কোডের খেলা চলছে। তার পাশাপাশি কেন্দ্র সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাস যোজনার টাকা দেয়নি ওরা এবার সবার অধিকার কেড়ে নিতে চায়। নাগরিকের সব অধিকার কেড়ে নেবে। ওয়ান ইলেকশন ওয়ান পার্টি, ওয়ান গভর্মেন্ট ওয়ান লিডার করতে চায় বিজেপি। নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মমতা এদিন বলেন, সকাল থেকে রাত্রি শুধুমাত্র ‘প্রচারবাবুর’ জয়গান। *প্রচার বাবুর ছবি আর বিজেপির লোগো সর্বত্রই। তিনি বলেন, এটা লোকসভার নির্বাচন তাই রাজ্যের উন্নয়ন হয়েছে সেটা আর বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নেই।
তবু তিনি এদিন রাজ্যের পাশাপাশি জেলার উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে বলেন, ‘মোদি সরকার গণতন্ত্রকে জেলখানায় ভরে দিয়েছেন সর্বত্রই ‘প্রচার বাবু’র কর্তৃত্ব। এমনটা হলে অস্তিত্বের সংকট দেখা দেবে’। তিনি বলেন, লোকসভায় শতাব্দি, অসিত মালকে হুমকি দেওয়া হয়েছে ,কারণ তারা মানুষের কথা বলেছেন। ভোটের আগে চাঁদুর বাড়িতে তল্লাশি হল যদিও চন্দ্রনাথ তাঁকে কিছু জানায়নি তবুও তিনি জানেন চান্দুকে বলেছে, ‘তৃণমূল করবে না বসে যাও’। আর এসবই ‘খেলা চলছে ’। তবে তাঁর সাফ যুক্তি, ভয় দেখিয়ে কোনও কাজ হবে না, ভাগাভাগি করেও কিছুই হয় না। এরপর তিনি বলেন, কেষ্টকে ভোটের আগে ওরা নজরব¨ি করে রাখতো, এখন ওকে জেল বন্দি করা হয়েছে। তবে ইলেকশনের পর ওকে ছেড়ে দেবে বলেও মমতার যুক্তি, কেষ্ট যাতে ইলেকশনে অংশগ্রহণ করতে না পারে তার জন্যই এমন ব্যবস্থা।
শুধু তাই নয়, এদিন নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত জনগণের উদ্দেশ্যে মোদির প্রসঙ্গ এনে তিনি জানতে চান, ‘আপনারা দুর্গাপূজা, সরস্বতী পুজো করেন না? মোদি বলেন , এখানে নাকি মা-বোনেদের সম্মানহানি হচ্ছে। তারপর তার সংযোজন, ‘আগে নিজেদের ঘরের দিকে তাকান। আপনারাই মহিলাদের সম্মান করেন না। তৃণমূলকে আটকাতে সিপিএম ও কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাত করেছে বিজেপি। ভোট ভাগ করিয়ে আসন দখল করতে চায়। কংগ্রেস এবং সিপিএমও হাত ধরাধরি করে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে চায়।’ মমতা এদিন জানান সিপিএমের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, এই রাজ্যে কংগ্রেসকে তারা সমর্থন করেন না। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপিকে আটকাতে ইন্ডিয়া জোটকে সমর্থন করবেন।
এরপরই ২০১৬ সালে এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায়দান প্রসঙ্গ নিয়ে ফের একবার সরব হন। *তারাপীঠ এসে নির্বাচনী জনসভায় শীতলকুচির প্রসঙ্গ টেনে এনে মমতা বলেন, *শীতলকুচির ঘটনায় এক রাজবংশী- সহ চারজন সংখ্যালঘুকে খুন করা হয়, এখানে যিনি বিজেপির টিকিট নিয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তিনি নিজের জালে জড়িয়ে গিয়েছেন। আমি তার নাম তুলতাম না, কিন্তু তিনি বলেছেন আমি নাকি তাকে ফাঁসিয়েছি। মমতার যুক্তি, তিনি কাউকে ফাসাননি, তার প্রশ্ন বিএসএফ জওয়ানরা কার কথায় গুলি চালিয়েছিল?
পেটে (বক্স করে)
‘অভিষেককে খুন করতে চেয়েছিল’
নিজস্ব প্রতিবেদন: মঙ্গলবার বীরভূমের তারাপীঠের জনসভায় মমতা বলেন, ‘ভোট চলাকালীন বিজেপির এক গদ্দার বলল, বোমা ফাটাব। আরে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে এত রাগ তো বোমা ফাটিয়ে মেরে দে! অভিষেককেও তো খুন করতে গিয়েছিলি। ধরে ফেলেছি আমরা।’ মমতা আরও বলেন, ‘তার (অভিষেকের) বাড়ি পর্যন্ত রেইকি করেছে। ফেসটাইমে ফোন করেছিল। বলেছে, আপকা সাথ বাত করনা চাহতে হ্যায়। দেখা করলেই গুলি করে দিত।’ মমতার কথায়, ‘ওদের (বিজেপির) বিরুদ্ধে যারাই লড়াই করবে, হয় তাদের জেলে ঢোকাবে, না হয় খুন করবে।’