রাজ্যে প্রথম দফার লোকসভা ভোটের দিন কোচবিহারে থাকার পরিকল্পনা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই মতো প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাধ সাধল নির্বাচন কমিশন। ঠিক হয়েছিল বৃহস্পতিবার সকালেই বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে তিনি কোচবিহারের উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেবেন। ভোটগ্রহণের দিন সকাল থেকেই তিনি কোচবিহারে সরেজমিনে ভোট প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখবেন । ১৯ তারিখ সন্ধ্যায় তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বিকেলেই এই সফর বাতিল করতে বলে কমিশনের বার্তা এল রাজভবনে।
কমিশন থেকে রাজভবনে ই-মেইল করে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, যেহেতু জেলাশাসক, পুলিশ সুপাররা ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকবেন এবং আজ ১৭ তারিখে সন্ধে ৬টার পরেই সাইলেন্স পিরিয়ড শুরু হয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভোটের কাজ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাই প্রোফাইল কোনো ব্যক্তি সেখানে গেলে তাঁর নিরাপত্তার প্রয়োজন হবে। এই সময়ে যে পুলিশ ফোর্স রয়েছে তা থেকে হাই প্রোফাইল কাউকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে না। এমনকী সাইলেন্স পিরিয়ডের পর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও যেখানকার ভোটার নন, সেখানে যেতে পারেন না। একই নিয়ম প্রয়োজ্য রাজ্যপালের ক্ষেত্রেও। কাজেই, কোচবিহার তিনি যেতে পারবেন না। যেহেতু সকলে ভোটের কাজে নিযুক্ত রয়েছে, তাই তাঁর নিরাপত্তার কিছু ব্যবস্থা করা যাবে না। তবে, রাজভবন থেকে এখনও পর্যন্ত জানানো হয়নি রাজ্যপালের সফরসূচি বাতিল করা হয়েছে কি না।
রাজ্যপালের কোচবিহার সফরের পরিকল্পনাকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘ভোটের প্রচার শেষের পর রাজ্যপাল এসে ভোটের এলাকায় থাকতে, ঘুরতে পারেন না। তিনি নির্বাচন কমিশনের কেউ নন। ভোটারও নন। বিজেপি এইভাবে পরোক্ষ প্রচার, প্রভাব খাটাতে চাইছে। অবিলম্বে রাজ্যপালের প্রথম দফা নির্বাচনের এলাকায় ঢোকা বন্ধ করা হোক।’
কোচবিহারের বাসিন্দাদের কাছে টাটকা হয়ে রয়েছে শীতলকুচির স্মৃতি। এবার যাতে সেসব না হয় তার জন্য সজাগ থাকবেন রাজ্যপাল। তাই তিনি ভোটের আগেই চলে আসছেন। আর নির্বাচনের দিন কোচবিহারে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
অন্যদিকে, কোচবিহার জেলা বিজেপি আজ নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করছে যাতে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার মনোনয়ন বাতিল করে দেওয়া হয়। কারণ তাঁর নাকি দুটি বিয়ে। আর মনোনয়নপত্রে আছে একটি। আবার নিশীথের বিরুদ্ধে আছে মামলা। ফলে সরগরম হয়ে উঠেছে কোচবিহার। শীতলকুচিতে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজন মারা যান বলে অভিযোগ আছে। তাই নির্বাচন কমিশনের বাড়তি নজর রয়েছে কোচবিহারে।