লোকসভা ভোটের মুখে ফের এক পুলিশকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরাল নির্বাচন কমিশন। এবার সরানো হল ডিসিপি সাউথ-ওয়েস্ট সৌম্য রায়কে। তিনি শুধু পুলিশ কর্তাই নন, সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক তথা তৃণমূলের অন্যতম তারকা মুখ লাভলী মৈত্রর স্বামীও বটে। প্রসঙ্গত, এর আগে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়েও আইপিএস সৌম্য রায়কে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিল কমিশন। কারণ, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে লাভলী প্রার্থী হওয়াতেই তাঁকে সরানো হয়। এবারও লোকসভা ভোটের মুখে ফের তৃণমূলের তারকা বিধায়ক লাভলীর স্বামী সৌম্য রায়কে সরানোর সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবারই নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে এ ব্যাপারে একটি চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ডিসিপি সাউথ-ওয়েস্ট আইপিএস সৌম্য রায়কে অবিলম্বে নির্বাচন-সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে যোগ নেই এমন কোনও পদে বদলি করার জন্য বলা হয়েছে। সঙ্গে রাজ্যকে এও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দক্ষিণ পশ্চিম ডিভিশনের ডিসিপি কাকে নিয়োগ করা হবে, তা ঠিক করতে কয়েকজন অফিসারের নাম পাঠাতে রাজ্যকে। আর এই নামের তালিকা পাঠাতে হবে ৩ এপ্রিল দুপুর তিনটের মধ্যে।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই গোটা দেশে কার্যকর হয়ে গিয়েছে আদর্শ আচরণবিধি। এই মডেল কোড অব কন্ডাক্ট কার্যকর থাকাকালীন নির্বাচন কমিশনের হাতে বিশেষ কিছু ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে। যার বলে প্রয়োজন অনুযায়ী অফিসার, আমলা, পুলিশকর্তাদের বদলি করতে পারে নির্বাচন কমিশন। সেই মতোই এবার তৃণমূলের তারকা বিধায়ক লাভলী মৈত্রর স্বামীকে বদলির সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।
কমিশনের এই ভূমিকায় অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিস্মিত মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘এ আবার কী! স্ত্রী বিধায়ক বলে কি স্বামী চাকরি করবে না? লাভলি বিধায়ক হওয়ার অনেক আগে সৌম্য আইপিএস হয়েছে। এ আবার কী!’ শুধু তাই নয়, কেন্দ্রকেও পালটা তোপ দেগেছেন তিনি। মমতার প্রশ্ন, ‘ভোটের মুখে নিজেদের কটা অফিসারকে বদলি করেছে? কজন বিএসএফকে বদলি করেছে? সকলের জন্য বিচার সমান হওয়া উচিত।’
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বদলি করে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন। শুরুটা হয়েছিল, রাজ্য পুলিশের ডিজির পদ থেকে রাজীব কুমারকে সরানো থেকে। তারপর চার জেলার জেলাশাসককে বদল করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবারই আবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর থেকে দুই সিনিয়র অফিসারকে অন্যত্র বদলির নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। এসবের মধ্যেই এবার আরও এক আইপিএস-কে অন্যত্র বদলি করল কমিশন।