জাতীয় স্তরের অ্যাথলেটিক্সে হাঁটা প্রতিযোগিতা প্রথম এবং তৃতীয় স্থান দখল করে সাফল্য অর্জন করলেন মালদার বাসিন্দা তনুশ্রী লালা। গত কয়েকদিন ধরে চেন্নাইয়ের জহরলাল নেহেরু স্টেডিয়াম প্রাপ্তবয়স্কদের জাতীয় স্তরের অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আর সেখানে অংশ নিয়েছিলেন মালদার ইংরেজবাজার শহরের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সি তনুশ্রী লালা। সেই প্রতিযোগিতার দুটি ইভেন্টে একটিতে ১৫০০ মিটার হাঁটা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করে সোনা জিতেছেন। অপর আরেকটি ইভেন্টে তৃতীয় স্থান দখল করেছেন তনুশ্রী। তাঁর এই সাফল্যে রীতিমতো প্রশংসা ঝড় উঠেছে মালদার ক্রীড়ামহলে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী তনুশ্রীর এই সাফল্যেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তনুশ্রী লালা জানিয়েছেন, জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়ে আমি খুব খুশি। আমার খেলাধুলার প্রতি একটা আলাদাই নেশা রয়েছে। আমার খেলাধুলা করতে ভালো লাগে। তাই নিজের কাজ ও পরিবার সামলে যেটুকু সময় পাই নিয়মিত অনুশীলন করি। আগামীতে আরো বড় সাফল্যের আশা করছি আমি।
উল্লেখ্য, ৩৭ তম পশ্চিমবঙ্গ মাস্টার অ্যাথলেটিকস মিটে তিনটি ইভেন্টে সোনা জিতেছিলেন তনুশ্রী লালা। চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজ্যের এই প্রতিযোগিতা। সেখানে সাফল্য পাওয়ার পর থেকেই জাতীয় স্তরে খেলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। তনুশ্রী লালা মালদার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। স্বামীও একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তাদের দুই ছেলে। পরিবার নিজের কাজ বজায় রেখে বাকি অবসর সময়ে নিয়মিত প্রস্তুতি চালিয়ে দিয়েছেন তিনি। রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় অনুর্ধ্ব ৩৫ বিভাগের ৮০০ মিটার দৌড়, দেড় হাজার মিটার দৌড় ও দুই কিলোমিটার হাঁটা প্রতিযোগিতা প্রথম হয়েছিলেন তনুশ্রী। রাজ্যস্তরে তিনটি বিভাগ প্রথম হয়ে জাতীয় স্তরে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছিলেন।
এর আগেও জাতীয় ও রাজ্য স্তরের একাধিক পদক পেয়েছেন তিনি। ৪২ তম ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ একটি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতলেন। তনুশ্রী লালার বড় ছেলে বর্তমানে কলেজ ছাত্র। ছোট ছেলে নবম শ্রেণি পড়ুয়া। ছেলেদের পড়াশোনা ও সংসার সামলায় যেটুকু সময় পান মাঠে গিয়ে অনুশীলন করেন তনুশ্রী। কোন দিন সকালে কোন দিন বিকেলে। কখনো মালদা বিমানবন্দর আবার কোনদিন মালদা রেলওয়ে ময়দানে অনুশীলন করেন। তনুশ্রী লালা বলেন, ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি আমার ঝোঁক। ছোটবেলা থেকে খেলাধুলো করেছি তারপর বিয়ে হয়ে যায় বন্ধ হয়ে যায় সবকিছু। পরে স্বামীর ইচ্ছায় আবার মাঠে ফিরি। নিয়মিত অনুষ্ঠান করে এখন প্রাপ্তবয়স্কদের একাধিক ইভেন্টে রাজ্য, জাতীয় স্তরে অংশগ্রহণ করে সোনা এবং ব্রোঞ্জ জিতে সাফল্য পেয়েছি।