নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল বলে দাবি। রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্তে পড়ে প্রায়শই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন চলাচলকারী যানবাহন থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানিয়েও লাভ না হওয়ার অভিযোগে আজ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ নাগরিক মঞ্চের ব্যানারে নেমে এলেন রাস্তায়। পথ অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন তাঁরা। অবরোধ তুলতে গিয়ে এলাকার মানুষের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদেরও। ঘটনা বাঁকুড়ার খাতড়া ব্লকের পাপড়া মোড়ের।
তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকার ঘটা করে পথশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিল। রাস্তাঘাটের সর্বত্র চোখে পড়ছে পথশ্রী প্রকল্পের বড় বড় ব্যানার। যে ব্যানারে দাবি করা হচ্ছে রাজ্যজুড়ে ১২ হাজার কিমি রাস্তা নতুন করে পাকা করা হচ্ছে অথবা পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। অথচ বাঁকুড়া জেলায় খাতড়া ব্লকের পাপড়া মোড় থেকে আড়কামা রাস্তার বেহাল অবস্থা থাকলেও, কিছু হচ্ছে না। বেহাল এই সড়ক নিয়ে সাধারণের ক্ষোভ ধীরে ধীরে জমতে জমতে আজ আছড়ে পড়ল পাপড়া মোড়ে।
স্থানীয়দের দাবি, পাপড়া মোড় থেকে আড়কামা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিমি রাস্তার হাল এমনই যে সেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করাই দুঃসাধ্য। ওই রাস্তা দিয়ে সারা দিনে ১০ থেকে ১২টি যাত্রীবাহী বাস চলাচল করলেও কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন বাসযাত্রীরা। কোনও গাড়ি ওই রাস্তায় ভাড়া যেতে চাইছে না। চলাচল করতে পারছে না অ্যাম্বুল্যান্সও। এলাকার মানুষ সাইকেল বা বাইকে যাতায়াত করতে গিয়েও বারেবারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন। রাস্তার এমন বেহাল অবস্থা বদলের দাবিতে এলাকার মানুষ বারেবারে দ্বারস্থ হয়েছে প্রশাসনের। কিন্তু অভিযোগ, ঘুম ভাঙেনি প্রশাসনের।
গত কয়েকবছর ধরে এমন দুর্ভোগের পর আজ নাগরিক মঞ্চের ব্যানারে এলাকার কমপক্ষে ২০ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ নেমে আসেন রাস্তায়। পাপড়া মোড়ের কাছে খাতড়া থেকে সিমলাপাল যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। তাঁরা দাবি করেন, জেলাশাসককে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে রাস্তার হাল খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ। দীর্ঘক্ষণ ধরে অবরোধের জেরে খাতড়া সিমলাপাল গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল স্তব্ধ হয়। অবিলম্বে বেহাল ওই সড়কের হালবদল না হলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ব্লক প্রশাসনের দাবি, গ্রামবাসীরা বারেবারে এই রাস্তা মেরামতের আবেদন জানালেও ব্লক স্তরে প্রয়োজনীয় ফান্ড না থাকায় রাস্তাটি পুনর্নির্মাণ করা যায়নি। বিষয়টি জেলা ও রাজ্যস্তরে জানানো হলেও, এখনও বরাদ্দ না মেলাতেই কাজ হয়নি।