‘কংগ্রেসকে মালদায় লোকসভা নির্বাচনে দুটি আসন ছাড়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু ওরা আরও চাইছে। তাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল একাই লড়বে। কোনও জোটে যাবো না।’ মালদার ইংরেজবাজারের সরকারি পরিষেবা প্রদানমূলক অনুষ্ঠানে এসে কার্যত ইন্ডিয়া জোট থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরে ইংরেজবাজার শহরের জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে এক হাত নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন,‘ যে সিপিএম এতদিন অত্যাচার চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে জোট করে চলতে চাইছে কংগ্রেস। আর এই জোটের মাধ্যমে এক প্রকার বিজেপিকে সাহায্য করা হচ্ছে। এটা কোনওরকম ভাবেই মানবো না। তৃণমূল একলা চলার রাজনীতিতেই বিশ্বাসী, তাই একাই লড়বো।’
এদিন তিনি বলেন,‘কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভালো ছিল। সিপিএম সেই সম্পর্ক খারাপ করেছে। সিপিএম বিজেপির একমাত্র দালাল। গ্রেটার ইন্টারেস্টে আমরা বলেছিলাম মালদায় তোমাদের দুটো আসন দিচ্ছি। জেতানোর দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু ওরা মানতে চায়নি। আমার একার ক্ষমতা আছে। আমি বিজেপিকে রুখতে পারি। ’
ইন্ডিয়া জোট নিয়ে সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে জলঘোলা শুরু হয়েছে। সোনিয়া গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়গে চেষ্টা করেও বরফ গলাতে পারেননি। এর আগে একলা চলার কথা একাধিকবার বলেছেন। তবে এদিন বহরমপুরে প্রশাসনিক সভায় মমতার গলায় কংগ্রেস নিয়ে কিছুটা হলেও সুর নরম দেখা গেল।
আজ মুর্শিদাবাদে ঢুকছে রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। বিকেলে অধীর গড়ে ঢুকবে রাহুলের কনভয়। তবে রাহুলের রাত্রিবাসের জন্য বহরমপুরে জায়গা দেওয়া হয়নি। কংগ্রেসের অনুনয়, বিনয়ে কাজ হয়নি। নাম না করে গান্ধি পরিবারকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ওই পরিবারের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে।’ তবে কী রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রাকে কিছুটা হলেও এবার বাংলায় জায়গা ছেড়ে দিতে চাইছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের ধারণা এমনটাই।
এদিন প্রশাসনিক সভা করেই বহরমপুরে দু’ঘণ্টা আগে পৌঁছে যান তিনি। এদিন রাহুলের পদযাত্রার আগে মুখ্যমন্ত্রী বহরমপুর তথা জেলাবাসীকে পদযাত্রা করে কী বার্তা দিতে চাইলেন তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোড় জল্পনা শুরু হয়েছে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ বহরমপুর স্টেডিয়াম মাঠে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা ও পদযাত্রা সেরে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নদিয়ার দিকে উড়ে যান। এদিন ১১০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। পাশাপাশি এক লক্ষ চব্বিশ হাজার উপভোক্তাকে পরিষেবা প্রদান করেন।