নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: পানাগড়ের রেলপারে সারদাপল্লি এলাকায় ৩ জনের খুনের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করল কাঁকসা থানার পুলিশ। এই নিয়ে মোট ৩ জনকে গ্রেপ্তার কর পুলিশ। ধৃতের নাম প্রসেনজিৎ বিশ্বকর্মা (৩০)। বুধবার ধৃতকে মহকুমা আদালতে পেশ করে কাঁকসা থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিমরনের কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মার সঙ্গে প্রসেনজিতের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল কয়েক বছর ধরে। এমনকি রিঙ্কি বিশ্বকর্মার অশ্লীল ছবি প্রসেনজিতের মোবাইলে থাকায় পরে সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, রিঙ্কি বিশ্বকর্মার সঙ্গে প্রসেনজিতের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকার কারণে সিমরনদের বাড়িতে ঘন ঘন যাতায়াত ছিল। যার কারণে ঘটনার দিন বাড়ির পোষা কুকুরগুলো চিৎকার করেনি। ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ প্রসেনজিৎকে গ্রেপ্তার করলেও, কে বা কারা ১০ নভেম্বর ৩ জনকে খুন করেছিলেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ পানাগড়ের রেলপারে সারদাপল্লিতে বিশ্বকর্মা নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে সিমরন বিশ্বকর্মা (২৩), তাঁর দিদা সীতা দেবী (৭০) ও মামা সোনু বিশ্বকর্মার (২৩) মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সোনুর দেহ বাড়ির একপাশে বাথরুমের সামনে ও সিমরন ও তাঁর দিদার দেহ দু’টি আলাদা ঘরের খাট থেকে উদ্ধার হয়। কাঁকসা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় এবং ঘটনার তদন্তে নামে।
রেলপারের বাসিন্দা ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মা স্ত্রীকে নিয়ে অসম বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে সিমরন ছিলেন। ঝাড়খণ্ড থেকে তাঁর দিদা ও মামা তাঁদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। ঘটনার দিন সিমরনের কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মা দাবি করেছিলেন, একজন হেলমেট পরা ব্যক্তি বাইকে চেপে তাঁদের বাড়িতে আসেন। সিমরন তাঁর হাত ধরে ঘরের ভিতরে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে তিনি সিমরনের ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যান। তিনি বাড়িতে কাজে ব্যস্ত থাকায় এর বেশি কিছু জানেন না।
কাঁকসা থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে ফোনের সূত্র ধরে প্রায় দেড় মাস পর চলতি মাসের ২ তারিখ সিমরনের কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের দাবি, তাকে পরের দিন মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ হেপাজতে নিয়ে ওই এলাকারই যুবক মহম্মদ জুনেদের নাম জানতে পারে। জুনেদ সিমরনকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল যা সিমরন প্রত্যাখ্যান করেন বলে জানা যায়। সেই কারণে তাঁর ওপর সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ গত শনিবার জুনেদকে গ্রেপ্তার করে রবিবার মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ হেপাজতে নেয়। রিঙ্কি ও জুনেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ প্রসেনজিতের নাম জানতে পারে। এরপরেই কাঁকসা থানার পুলিশ সারদাপল্লির বাড়ি থেকে মঙ্গলবার রাতে প্রসেনজিৎকে গ্রেপ্তার করে।