লাক্ষাদ্বীপ নিয়ে উৎসাহ বাড়ছে বিশ্বের, গুগলে লাক্ষাদ্বীপ নিয়ে রেকর্ড ভাঙা সার্চ

একদিকে যখন হ্যাশট্যাগ বয়কট মালদ্বীপ-এ মালদ্বীপ ভ্রমণ বাতিলের আহ্বান জানাচ্ছেন তারকা থেকে ক্রিকেটাররা, তখন গুগল সার্চে উঠে আসছে লাক্ষাদ্বীপের নাম। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণ করে সেখানকার সৈকত এবং সমুদ্রে স্নরকেলিং করার ছবি টুইটারে পোস্ট করে ভ্রমণ পিপাসসুদের মন জয় করে নিয়েছেন।
একদিকে প্রধানমন্ত্রী নিজে সেখানে যাওয়ায় লাক্ষাদ্বীপ নিয়ে যেমন কৌতূহল বাড়ছিল, তেমনই  পড়শি দেশ মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফর নিয়ে কটাক্ষ করায় ও মোদি সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করায় তেতে উঠেছে ভারত। এদেশ থেকে সারা বছরই তারকা, ক্রিকেটাররা মালদ্বীপ ভ্রমণে যান। ইদানীং মধ্যবিত্তরাও সেদেশে যান প্রাকৃতিক সৌ¨র্যের জন্য। বলতে গেলে লাক্ষাদ্বীপ ও মালদ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একইরকম। শুধু মালদ্বীপে অনেক বিলাসবহুল রিসর্ট আছে আর সে দেশে ভ্রমণের পরিকাঠামোও উন্নততর। মালদ্বীপের তিন মন্ত্রীকে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে।
 তবে তাতে রাগ কমছে না ভারতবাসীর। মালদ্বীপের একাধিক ট্রিপ ক্যানসেল করেছেন ভারতীয় পর্যটকরা। এমনকী ক্রিকেটার শচিন তেন্ডুলকার পর্যন্ত বলছেন ভারতে এমন অনেক সু¨র জায়গা আছে, যেগুলো এক্সপ্লোর করা যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ক্রমশই লাক্ষাদ্বীপ নিয়ে  জনমনে উৎসাহ বাড়ছে। তার প্রমাণ গুগল সার্চ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কয়েকদিনে বিশ্বজুড়ে গুগলে লাক্ষাদ্বীপের যে সার্চ শুরু হয়েছে, তার গ্রাফ গত ২০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। অর্থাৎ কেবল ভারত নয়, গোটা বিশ্বের মানুষের মধ্যে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে লাক্ষাদ্বীপ সম্পর্কে কৌতূহল অতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছে। গত ২ জানুয়ারি লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মূলত, একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করতেই লক্ষদ্বীপ যান তিনি। তারপর সেখানে একরাত কাটিয়ে নির্জন সৈকতে আরামকেদারায় বসে নীল সমুদ্রের শোভা দর্শন থেকে রোমাঞ্চকর ইভেন্ট স্নরকেলিং করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতেও যে ছবির মতো এত সুন্দর সৈকত রয়েছে এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরাও সেখানে আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন, সেটা হয়তো অনেকেরই জানা ছিল না।
লাক্ষদ্বীপ থেকে ফিরে এসে নরেন্দ্র মোদি দেশের অ্যাডভেঞ্চারিস্ট ও ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এই দ্বীপ ঘুরে দেখার আবেদনও জানিয়েছেন। টুইটারে তিনি নীল আকাশ ও অসীম সমুদ্রের সামনে সাদা সৈকতের ছবি তুলে ধরে লিখেছেন, ‘যাঁরা এই রোমাঞ্চ আলিঙ্গন করতে চান, তাঁরা তাঁদের তালিকায় লাক্ষাদ্বীপ রাখতে পারেন।’ বিদেশে যাওয়ার বদলে স্থানীয় এই সৈকতকে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে তুলে ধরার জন্য ক্রিকেটার, সেলিব্রিটি থেকে প্রতিটি ভারতীয়র কাছে আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদীর এই টুইট-পোস্টের পর মলদ্বীপের মন্ত্রী আবদুল্লাহ মাহজুম মজিদ পাল্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, সমুদ্র সৈকত পর্যটনে ভারতের থেকে অনেক এগিয়ে মলদ্বীপ। পর্যটনস্থল হিসেবে লাক্ষাদ্বীপের প্রচার করে, প্রধানমন্ত্রী মোদী মলদ্বীপ থেকে পর্যটকদের নজর ঘোরাতে চাইছেন বলেও অভিযোগ তোলেন। এরপর মলদ্বীপের অন্যান্য কয়েকজন মন্ত্রীও নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ‘জোকার’ বলে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। যার জল গড়ায় দ্বিপাক্ষিক কূটনীতিতেও। ভারত থেকে একের পর এক ট্রিপ ক্যানসেল হয়ে যাওয়ায় নড়ে বসে পর্যটন নির্ভর সেই দেশও। কারণ মালদ্বীপে ভারত থেকে বছরভর অসংখ্য পর্যটক বেড়াতে যান। ঘটনার জেরে চাপে পড়ে মালদ্বীপ সরকার তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড  করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × four =