তোলার টাকা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করার অভিযোগ উঠল স্থানীয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ঘোলা থানার বিলকান্দা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অপূর্বনগরে। মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম অভিজিৎ বিশ্বাস ওরফে বিষ্ণু (২৫)। তাঁর চানাচুরের কারখানা রয়েছে। যদিও মৃত ব্যবসায়ী এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত ছিল। অভিযোগ উঠেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকার দুষ্কৃতী বাদল মণ্ডল ও তার দলবল অভিজিতের কাছে তোলার টাকা চাইছিল। তোলার টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভে অভিজিতকে ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করল দুষ্কৃতীরা।
মৃতের স্ত্রী মৌ বিশ্বাস জানান, এলাকার কিছু দুষ্কৃতী তাঁর স্বামীর কাছে তোলার টাকা চেয়ে হুমকি দিত। তাই কয়েকদিন ধরে ওকে বাড়ি থেকে বেরোতে দিতাম না। কিন্তু রবিবার রাতে বাবাই দা ওকে পার্টি অফিসে ডেকেছিল। সেখান থেকে মেয়ের স্কুলের জিনিসপত্র কিনে স্বামী বাড়ি ফিরছিল। মৌ দেবীর অভিযোগ, বাড়ির কাছেই স্থানীয় দুষ্কৃতীরা তাঁর স্বামীর ওপর হামলা চালায়। রাস্তায় ফেলে স্বামীকে ওরা এলোপাতাড়ি পেটায়। মাথায় ইট দিয়ে ওরা আঘাতও করে। এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে আসতেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এদিকে রক্তাক্ত অবস্থায় অভিজিতকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সোমবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
বাদল ছাড়াও ঘটনায় রাজা, বলাই, নীতিশ ও অর্জুন জড়িত বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের। মৃতের মা আলপনা বিশ্বাস জানান, লোন নিয়ে চানাচুর কারখানা তৈরি করা হয়েছে। তবুও বাদল মণ্ডল ও তার দলবল দু’লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছিল। ওই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ওরা ছেলের ওপর রেগে ছিল। আলপনা দেবীর অভিযোগ, টাকা না পেয়ে ওরা কালী পুজোর তিনদিন বাদে কারখানায় ভাঙচুর চালায়। সিসিটিভি ক্যামেরা ও মিটার বক্স ওরা ভেঙে দেয়। এমনকি ক্যাশ বাক্স থেকে ওরা টাকা লুট করে চম্পট দেয়। সেইসময় ঘোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তখন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ মৃতের মায়ের।
তাঁর অভিযোগ, রবিবার রাতে পিস্তলের বাট দিয়ে ছেলের মুখে আঘাত করে সমস্ত দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আর ইট দিয়ে ছেলের মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানান, মৃত অভিজিৎ তাঁর মামাতো ভাই। রাতে বাইকে করে তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। বাদল, অর্জুনরা তাদের পথ আটকায়। বাইক থামাতেই পাশের গলি থেকে সাত-আটজন এসে প্রথমে তাকে মারধর শুরু করে। সেখান থেকে সে কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচেন। কিন্তু ওরা অভিজিৎ-কে ঘিরে ধরে পেটায়। ইট দিয়ে ওর মাথায় আঘাত করে। এলাকার লোকজন ছুটে আসতেই ওরা পালিয়ে যায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ঘোলা থানার পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় জড়িত দুÜৃñতীরা এখনও অধরা। তবে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির সরব হয়েছেন মৃতের পরিবার-পরিজন ও পড়শিরা।