বর্ষবরণে শীত উধাও, বুধবারের পর থেকে পরিবর্তন আবহাওয়ায়

বর্ষবরণে দিনের বেলায় কার্যত শীত উধাও। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাঁকিয়ে শীতের কোনও সম্ভাবনাই নেই। সকাল সন্ধ্যা শীতের আমেজ থাকলেও দিনের বেলায় লাগবে না ঠাণ্ডা। বুধবারের পর থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন দক্ষিণবঙ্গে। তাপমাত্রা বাড়বে; বাতাসে বাড়বে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ। শুক্র ও শনিবার মেঘলা আকাশ। হালকা বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা পশ্চিমের জেলাগুলিতে।

তবে উত্তরবঙ্গে বরফেই বর্ষবরণ বাংলায়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হালকা তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিংয়ে এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহায়া দফতর। একইসঙ্গে সিকিমেও চলবে বৃষ্টি ও তুষারপাত। তার প্রভাব দার্জিলিংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকায়। বৃষ্টি হবে দার্জিলিং এবং কালিম্পং সহ উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায়। পশ্চিমি ঝঞ্ঝা পাস করার ফলেই আবহাওয়ার পরিবর্তন।

তবে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গে। কারণ, আরব সাগরে নিম্নচাপ শক্তি বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগর উপকূল এ ঘূর্ণাবর্ত। দক্ষিণ পূর্ব আরব সাগরে নিম্নচাপ আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে। বাংলাদেশ ও সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। দক্ষিণ ভারতে রয়েছে উত্তর-পূর্ব হাওয়ার প্রভাব। এরই জেরে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃহস্পতি ও শুক্রবার হালকা বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা। বুধবারের পর আবহাওয়ার পরিবর্তন দক্ষিণবঙ্গে মেঘলা আকাশের সম্ভাবনা। সকালে ও সন্ধ্যায় হালকা শীতের আমেজ থাকলেও দিনের বেলায় শীত কার্যত উধাও। স্বাভাবিকের দুই থেকে চার ডিগ্রি উপরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। খুব সকালে হাল্কা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকবে কিছু কিছু জায়গায়। কোথাও কোথাও ঘন কুয়াশার দাপট। কুয়াশা কেটে গেলে মূলত পরিষ্কার আকাশের সম্ভাবনা। বাংলাদেশের উপকূলে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত। এর ফলে পূবালি হাওয়ার দাপট বাড়ছে। কমেছে উত্তর-পশ্চিমি শীতল হাওয়ার প্রভাব।

এদিকে কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের অনেকটাই উপরে। সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি। শনিবার বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের সর্বোচ্চ পরিমাণ ৪৯ থেকে ৯৬ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা শহরে তাপমাত্রা থাকবে ১৭ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের অনেকটাই উপরে। বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। আগামী ৭ দিন আবহাওয়া পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই। সকাল সন্ধ্যায় শীতের আমেজ থাকলেও দিনের বেলায় লাগবে না ঠাণ্ডা। সকালে হাল্কা-মাঝারি কুয়াশা ও ধোঁয়াশা। পরে মূলত পরিষ্কার আকাশ। তবে বৃষ্টি ও বরফেই বর্ষবরণ উত্তরবঙ্গে। নতুন বছরের শুরুতে বৃষ্টি ও হালকা তুষারপাতের সামান্য সম্ভাবনা দার্জিলিংয়ে। উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় হাল্কা বৃষ্টির পূর্বাভাস। হাল্কা তুষারপাত হতে পারে সান্দাকফু সহ দার্জিলিংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকায়। বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং এবং কালিম্পং-এর পাহাড়ি এলাকায়। রবিবার থেকে মঙ্গলবার এর মধ্যে এই বৃষ্টি ও তুষারপাতের প্রবল সম্ভাবনা। সিকিমে তুষারপাতের প্রভাব পড়তে পারে দার্জিলিংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকায়। শনিবার নতুন করে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা, উত্তর-পশ্চিম ভারতে। রবিবার থেকে বুধবারের মধ্যে আরও এক দফায় হালকা বৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনা সিকিম এবং দার্জিলিংয়ের খুব উঁচু এলাকায়। বাকি উত্তরবঙ্গে শুকনো আবহাওয়া। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা প্রায় একই রকম থাকবে। হাল্কা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকবে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর জেলাতে। একই রকম তাপমাত্রা থাকবে আগামী কয়েক দিন।

এদিকে ‘কোল্ড-ডে’ পরিস্থিতি উত্তর-পশ্চিমের সমতল এলাকায়।পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের কিছু অংশে আগামী দু’দিন ‘কোল্ড-ডে’ পরিস্থিতি। ঘন থেকে অতি ঘন কুয়াশা সতর্কতা, পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশে। ঘন কুয়াশার সম্ভাবনা ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডেও। অসম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, উত্তর -পূর্ব ভারতের এই রাজ্যগুলিতে কুয়াশার দাপট থাকবে। এরই পাশাপাশি পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে ঘূর্ণাবর্ত রাজস্থানে। উত্তর-পশ্চিম ভারতের পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনা। বর্ষশেষে ভিজবে দক্ষিণ ভারত এবং উত্তর পশ্চিম ভারত। বর্ষবরণের দিনেও বৃষ্টির আশঙ্কা।  উত্তর পূবালি হাওয়ায় বৃষ্টির সম্ভাবনা তামিলনাড়ু সহ দক্ষিণ ভারতে। তামিলনাডু কেরল এবং মাহেতে বৃষ্টির সম্ভাবনা। অন্যদিকে বর্ষশেষের পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাব উত্তর-পশ্চিম ভারতে। বৃষ্টি ও তুষারপাতের আশঙ্কা। পূবালি হওয়ার কারণে বর্ষশেষে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে, ছত্তিশগড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা। বর্ষ শেষ ও বর্ষবরণে তাপমাত্রা বাড়তে পারে মধ্য ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে। দু থেকে চার ডিগ্রি তাপমাত্রাতে বাড়তে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − seven =