হাওড়ার ক্রিসমাস কার্নিভ্যালে বুধবার রাতে অশান্তি ও গন্ডগোল পাকানোর অভিযোগে রাজ জালান এবং আকাশ দত্ত নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে হাওড়ার জগাছা থানার পুলিশ। ধৃতদের আজকে হাওড়া আদালতে পেশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার হাওড়ার ক্রিসমাস কার্নিভ্যাল বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই নড়েচড়ে বসে হাওড়ার প্রশাসন ও হাওড়া সিটি পুলিশ। বুধবার এই দুজনকে আটক করা হলেও বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর এই দুইজনকে গ্রেফতার করে জগাছা থানা। শুক্রবার তাঁদের আদালতে হাজির হবে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। কার্নিভ্যালে অশান্তি করার অভিযোগে বেশ কয়েক জনের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
কার্নিভ্যালে বেআইনি ভাবে পার্কিং ফি আদায় করা হচ্ছে, এই অভিযোগ ঘিরে বুধবার রাতে ধুন্ধুমার বেধেছিল। হাওড়া পুর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর ব্যক্তিগত সহকারী সৌরভ দত্ত বিষয়টি মিটমাট করতে এলে তাঁকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে শিবপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির ৪০-৫০ জন সঙ্গীর বিরুদ্ধে। পরে মুখ্য প্রশাসক সাংবাদিক বৈঠক করতে গেলে বিধায়কের অনুগামীরা সেখানে জোর করে ঢুকে বৈঠক ভেস্তে দেন বলে অভিযোগ। এর পরেই নিরাপত্তাজনিত কারণে কার্নিভ্যাল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করেন সুজয় চক্রবর্তী। গোটা ঘটনার কথা জানার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে চাকলা যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী কার্নিভ্যাল বন্ধ করা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা আমি সমর্থন করি না। এটা একেবারেই ঠিক হয়নি। পুর প্রশাসক নিজের মতো আইন মেনে কাজ করবেন। কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই কার্নিভ্যালস্থলে বিশাল বাহিনী এবং র্যাফ নিয়ে পৌঁছন হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ৩টে নাগাদ সেখানে আসেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। অভিযোগ, অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকার পরেই প্রথমে চেয়ারপার্সনের সঙ্গে এক প্রস্ত বাদানুবাদ হয় বিধায়কের। এর পরে ক্রীড়ামন্ত্রী আসার পরে তাঁকে স্বাগত জানানোর সময়ে চেয়ারপার্সনকে মনোজ ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ।
সুজয় ও মনোজ দুজনকে নিয়ে রুদ্ধ-দ্বার আলোচনা করে অরূপের মধ্যস্থতাতেই সাময়িক ভাবে বিরোধ মেটে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার জানান হয় বুধবার মাঝপথে কার্নিভ্যাল বন্ধ করা হয়েছিল, তাই ২ জানুয়ারির পরিবর্তে ৩ জানুয়ারি শেষ হবে।