বছর পেরলেই চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন। মার্চ-এপ্রিলে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। তার আগে উন্নয়ন অস্ত্রে ভরসা রেখেই পাহাড় জয়ের নীল নকশা সাজিয়ে ফেলেছে তৃণমূল। এবার পাহাড় সফরে গিয়ে তাই জিটিএ-র জন্য ঢালাও অর্থ বরাদ্দ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার একাধিক প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস করেন তিনি। বলেন, পাহাড়ের সঙ্গে এখন তাঁর রক্তের সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাই পাহাড়কে আরও অনেক কিছু দিতে চলেছে তাঁর সরকার।
শুক্রবার কার্শিয়াংয়ে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি জিটিএ-র জন্য ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করলেন। আরও বড় সুখবর, জিটিএ কর্মীদের বেতন কাঠামোর পরিবর্তন করে বেতনবৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই ঘোষণার পর উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন সভায় উপস্থিত পাহাড়ের বাসিন্দারা।
একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে বুধবার প্রায় এক সপ্তাহের জন্য উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাইপোর বিয়ের অনুষ্ঠান ছাড়াও সরকারি ও দলীয় অনুষ্ঠান রয়েছে আগামী ১২ তারিখ পর্যন্ত। শুক্রবার কার্শিয়াংয়ে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী পাট্টা বিলি নিয়ে জানান, দার্জিলিং, কালিম্পং জেলার অনেকে জমির পাট্টা পেয়েছেন। আরও অনেককে দেওয়া হবে। যাঁরা পাট্টা পাওয়ার যোগ্য, সরকারি সমীক্ষার পর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে তাঁদের পাট্টা দেওয়ার কাজ হবে। ইতিমধ্যে নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এর পর পাহাড়বাসীকে চমক দিয়ে তিনি ঘোষণা করেন, জিটিএ-র কাজের জন্য আরও ৭৫ কোটি টাকা দেওয়া হল সরকারের তরফে। শুধু তাই নয়, ২০০৯ এবং ২০১৯ সালের পে রোল অনুযায়ী, জিটিএ কর্মীদের বেতন কাঠামোয় সংস্কার করা হচ্ছে। কর্মীদের অবসরের পর আর্থিক সহায়তা করা হবে। অবসরের পর ২০ লক্ষ টাকা গ্র্যাচুইটি পাবেন তাঁরা। এছাড়া আরও কিছু সুবিধা পাবেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। অর্থাৎ জিটিএ-কে আরও সুবিধাদানের মধ্যে দিয়ে পাহাড়ের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলিকে কাছে টানার চেষ্টায় শাসকদল। তবে সরকারের তরফে পাহাড়বাসীর জন্য একাধিক প্রকল্প ঘোষণা আদতে পাহাড়ের উন্নয়নেই সহায়ক হবে, তা নিশ্চিত।
এছাড়া পাহাড়ের স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, রিজিওনাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এবার জিটিএ-র অধীনস্থ স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ হবে। তাতে অভাব মিটবে, পড়াশোনার মানোন্নয়ন হবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।