ফিরল গেরুয়া ঝড়।মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়ে জয়ের পথে বিজেপি। ব্যতিক্রম শুধু তেলেঙ্গানা। এ রাজ্যেই একমাত্র বুথ ফেরত সমীক্ষা কার্যত সফল করে ক্ষমতায় আসতে চলেছে কংগ্রেস।চার রাজ্যেই ইভিএম গণনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, পোস্টাল ব্যালট গণনায় ছত্তীসগড়ে কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও ইভিএম মেশিন খুলতেই বিজেপির পাল্লা ভারী হয়ে যায়। এছাড়াও, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানেও বিজেপি, কংগ্রেসের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। শুধুমাত্র তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের ফল ভাল হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।
তিন রাজ্যে ভালো ফলের পর রবিবার সন্ধ্যায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে অবশ্য সকাল থেকেই উৎসবের আবহ। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী পৌঁছলে সেই উচ্ছ্বাস যে বাঁধ ভাঙবে, তা নিশ্চিত। কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে জয়ের পর বার্তাও দেওয়ার কথা মোদীর।
রবিবার সকাল থেকেই গোটা দেশের চোখ মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিশগড়-রাজস্থান-তেলেঙ্গানায় ভোট গণনা নিয়ে। সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে গণনা ৷ ছত্তিশগড়ে প্রথম থেকেই বিজেপিকে অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়েছিল কংগ্রেস। তবে বেলা বাড়তেই কংগ্রেস এখন পিছিয়ে রয়েছে, বিজেপি রয়েছে এগিয়ে ৷ পাশাপাশি তেলেঙ্গানায় বিআরএসকে পিছনে ফেলে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস ৷ তবে মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও ছত্রিশগড় ও রাজস্থানে সরকার গড়তে চলেছে গেরুয়া শিবির ৷
চার রাজ্যের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়ে কার্যত কংগ্রেস-বিজেপির মুখোমুখি লড়াই ছিল। কিন্তু তেলেঙ্গানায় ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-এর সঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে ছিল মূল লড়াই ৷ দৌড়ে রয়েছে বিজেপিও ৷ ছত্তিশগড়ে প্রথম থেকেই বিজেপিকে অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়েছিল কংগ্রেস। তবে বেলা বাড়তেই কংগ্রেস এখন পিছিয়ে রয়েছে, বিজেপি রয়েছে এগিয়ে ৷ পাশপাশি তেলেঙ্গানায় বিআরএসকে পিছনে ফেলে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস ৷ তবে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে প্রথম থেকেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি ৷
রাজস্থানে ১১৯ আসনে এগিয়ে বিজেপি, ৬৬ আসনে এগিয়ে কংগ্রেস ৷ ছত্তিশগড়ে ৫১ আসনে এগিয়ে বিজেপি, ৩৭ আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস ৷তেলেঙ্গানায় বিআরএস ৪১ আসনে এগিয়ে, কংগ্রেস এগিয়ে ৬৪ আসনে, বিজেপি 9টি’তে ৷মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ১৫৯, কংগ্রেস ৬৮ আসনে এগিয়ে ৷এদিকে, প্রতি মুহূর্তে খেলা ঘুরছে মধ্যপ্রদেশে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শুরুর দিকে কংগ্রেস কিছুটা এগিয়ে থাকলেও, এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে এবার এগিয়ে রয়েছে বিজেপি ৷ ইতিমধ্যেই মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান তাঁর এক্স (টুইট)-এ লেখেন, “জয় ভারত মাতা, জয় জনতা জনার্দন ৷ আজ মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল চলছে এবং আমি আত্মবিশ্বাসী যে জনগণের আশীর্বাদে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদি জি-এর যোগ্য নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আবারও সরকার গঠন করতে চলেছে। বিজেপির সকল প্রার্থীকে আন্তরিক অভিনন্দন।”
চার রাজ্যের হেভিওয়েট প্রার্থী-চার রাজ্যের উল্লেখযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির শিবরাজ সিং চৌহান (তিনি এগিয়ে রয়েছেন)। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের অশোক গেহলতও (তিনি এগিয়ে রয়েছেন)। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের ভূপেশ বাঘেল (তিনি এগিয়ে রয়েছেন) ৷ তেলেঙ্গানার মুখ্য়মন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও’ও কামারেড্ডি কেন্দ্র থেকে (পিছিয়ে রয়েছেন) ৷ আরও এক কেন্দ্রে (গজওয়েল) তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও’ দাঁড়িয়েছেন ( তিনি এগিয়ে রয়েছেন) ৷
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, “মধ্যপ্রদেশে বিজেপিই সরকার গড়বে ৷ এখাকার সাংসদরা সমাজকল্যাণ এবং গরীবদের উন্নতির প্রকল্পগুলির সাহায্য করে ৷ জনগণের আশীর্বাদ বিজেপির সঙ্গে থাকবে ৷”
মধ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথ বলেছেন, “আমি খুব আত্মবিশ্বাসী, আমি মধ্যপ্রদেশের ভোটারদের বিশ্বাস করি ৷”
তেলেঙ্গানায় উৎসবের মেজাজে কংগ্রেস ৷ কংগ্রেস কর্মীরা হায়দরাবাদে পার্টি অফিসের বাইরে আতশবাজি ফাটাচ্ছে ৷ কারণ তাঁদের মতে, দল তেলঙ্গানায় ৫২ টি আসনে এগিয়ে রয়েছে ৷
বিজেপি এগিয়ে গেল ছত্তিশগড়ে। প্রথম থেকে কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও বেলা গড়াতেই পরিসংখ্যান বদলাতে শুরু করে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শুরু হয় কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে।চাপে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। কামারেড্ডি কেন্দ্র থেকে ক্রমশ পিছিয়েই যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর। গণনার শুরুতে প্রথম স্থানে থাকলেও, বেলা যত বাড়ছে, ততই পিছিয়ে পড়ছেন তেলেঙ্গানা মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর।তেলেঙ্গানায় ইতিমধ্যেই ‘বাই বাই কেসিআর’ বলেও স্লোগান উঠেছে ৷ তেলেঙ্গানা কংগ্রেস অফিসে উদযাপনে মেতেছেন দলীয় কর্মীরা ৷
সকাল সাড়ে ১২টা পর্যন্ত যা খবর, তাতে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তীসগড়ে কংগ্রেসের থেকে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তবে তেলেঙ্গানাতে জোর টক্কর দিচ্ছে কংগ্রেস। ভোট বিশেষজ্ঞদের মতে, যা ট্রেন্ড তাতে কী ফল হতে চলেছে তা স্পষ্ট হচ্ছে।
সকাল সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চার রাজ্যের যা ফলাফল:
মধ্যপ্রদেশে মোট ২৩০টি আসন। এই রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গড়তে গেলে জিততে হবে ১১৬টি
আসনে। প্রাথমিক ট্রেন্ডে সেই ম্যাজিক ফিগার পেরিয়ে গিয়েছে বিজেপি। ওই রাজ্যে গেরুয়া শিবির এগিয়ে ১৫৯টি আসনে। আর কংগ্রেস ৬৭টি আসনে এগিয়ে। অন্যান্যরা ৪টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
রাজস্থানেও এগিয়ে আছে বিজেপি। অনেকেই বলছেন মরুরাজ্যের শাসনে পালাবদল হতে পারে। এই রাজ্যে ১১২টি আসনে এগিয়ে আছে বিজেপি। কংগ্রেসও খুব একটা পিছিয়ে নেই। তারা ৭১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। রাজস্থানে মোট আসন ১৯৯টি।
মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান কংগ্রেসের চিন্তা বাড়ালেও তেলেঙ্গানা হাসি ফোটাচ্ছে। ভোটের ফলাফলের প্রাথমিক ট্রেন্ড দেখে যে প্রশ্ন বড় হয়ে উঠছে তা হল, কে চন্দ্রশেখর রাও সরকার কি থাকবে তেলেঙ্গানায়, নাকি কুর্সির দখল নেবে কংগ্রেস? দেখা যাচ্ছে, এই রাজ্যে ১১৯ আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। তাতে কংগ্রেস ম্যাজিক ফিগার ৬০টি আসনের বেশিতে এগিয়ে আছে। হাত শিবির এগিয়ে রয়েছে ৬৬ আসনে। সেখানে কেসিআরের দল বিআরএস এগিয়ে ৩৮টি আসনে। বিজেপি এগিয়ে মাত্র ৯ আসনে।
অন্যদিকে ছত্তীসগড়েও বিজেপি এগিয়ে। ৯০ আসনের এই রাজ্যে হাত শিবির এগিয়ে ৩৬টি আসনে। অনেকটাই এগিয়ে গেরুয়া শিবির। তারা এগিয়ে ৫৩টিতে।