নিজস্ব প্রতিবেদন, আসানসোল: আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারের অন্তর্গত কুলটি থানার পুলিশ ও বাংলা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের জামতারার মিহিজাম পুলিশ মিহিজামের রূপনারায়ণপুর মেহিজাম যাওয়ার প্রধান রোডে একটি বন্ধ হোটেলে অভিযান চালায়। সেখানে জাল লটারির টিকিট ছাপানোর কারখানার সন্ধান পাওয়া যায় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই অভিযানে উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণে জাল লটারি ও লটারি ছাপার সামগ্রী। সেখান থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঝাড়খণ্ড পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে এই ঘটনায় ধৃতরা হল কুণাল মণ্ডল, বিশাল মণ্ডল,শিবু গোপ, হেমু মল্লিক, আদিত্য মল্লিক, অন্নত মল্লিক, আস্তিক অধিকারী। তবে এই হোটেলের মালিক চন্দন ঠাকুরকেও খুঁজছে পুলিশ। এই বিষয়ে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা নং ৭৪/২৩, ৪ লটারি আইন ১৯৯৮ এবং ৭ (৩) লটারি নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯৮ এর অধীনে সাতজনেরর নামে এবং অন্যান্য অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জামতারা পুলিশ সুপার অনিমেশ নাইথানি জানান, আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে কুলটি পুলিশের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যায় যে মিহিজাম থানার অন্তর্গত আমোই রেলওয়ে আন্ডারপাসের কাছে নকল লটারি ছাপানো হচ্ছে এবং তা প্রচার করা হচ্ছে বাংলায়। যেখান থেকে টিকিট বিক্রেতারা সরকারকে কর ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করছে।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে এসডিপিও আনন্দ জ্যোতি মিঞ্জ ও থানার ইনচার্জ ভাস্কর ঝাঁ-র নেতৃত্বে একটি দল গঠন করে অভিযান চালানো হয়। সেখানে অভিযান চালিয়ে নকল লটারি তৈরিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, আটটি ল্যাপটপ, ১২টি ডিজিটাল প্রিন্টার, পাঁচটি স্ট্যাপলার, বিভিন্ন সাইজের ১৩০০ লটারির বান্ডিল, প্রিন্ট করা লটারির টিকিট, সাতটি ব্যাগ, একটি ভারী কাগজের কাটিং মেশিন পাওয়া যায়। তাছাড়া তিনটি ব্যবহৃত কার্টিজ, পাঁচটি বাইক ও দু’টি প্রিন্টিং মেশিন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযানে ওই বন্ধ হোটেল থেকে মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাঁর দাবি, ধৃতরা স্বীকার করেছে এই লটারি ছাপাবার পর বাইক বা বাসের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে ওই লটারিগুলোকে পাচার করা হত এবং ঝাড়খণ্ড লাগোয়া শিল্পাঞ্চলের বর্ডার থেকে সেই লটারি নিয়ে এসে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিত ডেলিভারি বয়। উল্লেখ্য, এর আগে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বেশ কিছু থানা ঝাড়খণ্ড লটারি নামে অবৈধ লটারি আটক করে এবং গ্রেপ্তারও করা হয় বেশ কয়েকজনকে। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমতিপ্রাপ্ত লটারির জাল চক্র ফাঁস হওয়াতে চিন্তার ভাঁজ পুলিশের কপালে।