স্বামী ভিন রাজ্যে থাকায় সংসার চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের গৃহবধূ। অর্ধাহারে থেকে ১৮ দিনের নিজের পুত্র সন্তানকে এলাকার ব্যবসায়ী দম্পতির কাছে দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছিল ওই গৃহবধূর বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সন্তানটি উদ্ধার করে গৃহবধূর কাছেই ফিরিয়ে দেন। আর তারপরেই সোমবার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক প্রশাসন ওই গৃহবধূর পাশে দাঁড়াল। সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও সৌমেন মণ্ডল এদিন সরকারি ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ওই গৃহবধূর বাড়িতে যান। তাকে সবরকম সহযোগিতা করেন।
উল্লেখ্য, মালদার চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পিপলা গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মী দাস। স্বামী ভিন রাজ্যে কর্মরত। ঠিক ভাবে টাকা পাঠাতে পারে না ওই গৃহবধূর স্বামী বলে অভিযোগ। ওই গৃহবধূর এক বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। চলতি বছর ১ নভেম্বর হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে আরেকটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় লক্ষ্মীদেবী। কিন্তু বাড়িতে এতটাই টাকার অভাব যে সদ্যোজাতের প্রয়োজনীয় কোনও খাবার বা সামগ্রী কেনার ক্ষমতা নেই লক্ষ্মীদেবীর।
গৃহবধূ লক্ষ্মী দাস জানিয়েছেন, স্থানীয় বিনোদ আগরওয়ালা নামে এক ব্যবসায়ীর কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু কোনও পুত্র সন্তান নেই। লক্ষ্মীর সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে টাকার বিনিময়ে কিনে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। তাই অভাবী লক্ষ্মীদেবী দেড় লক্ষ টাকার বিনিময় তার সদ্যোজাতকে তুলে দেন বিনোদ আগরওয়ালার কাছে। কিন্তু সেই খবর জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
এদিন ওই গৃহবধূর বাড়িতে যান হরিশ্চন্দ্রপুর এক ব্লকের ভিডিও সৌমেন মণ্ডল। এছাড়াও মাসে মাসে চাল এবং অর্থ সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পরিবারটির সমস্যা সমাধানের ব্যাপারেও আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও। তিনি বলেন, চাঁচল মহকুমা প্রশাসনের নির্দেশে এদিন ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করে তাকে নিত্য প্রয়োজনেও সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে। পরিবারটির সমস্যার কথা শুনেছি। তাদের আর্থিক সাহায্য এবং মাসে মাসে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তারা সরকারি ঘর পেয়েছে কি না, তাও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।