সিকিমে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় পুরোদমে চলছে উদ্ধারকাজ। শনিবার সিকিম প্রশাসনের তরফে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ৫৬ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে উদ্ধারকাজ এগোলে এই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মূলত তিস্তা নদীর পাড় থেকেই একের পর এক দেহ উদ্ধার হচ্ছে। সিকিম থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৬ জনের দেহ ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৩০ জনের দেহ। সেনা জওয়ান-সহ এখনও ১৪২ জনের কোনও খোঁজ নেই।
সিকিম প্রশাসন জানিয়েছে, মংগন জেলা থেকে ৪, গ্যাংটক থেকে ৬, পাকিয়ং থেকে ১৬ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সাত জওয়ানের দেহ। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার থেকে মোট ৩০ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
উত্তর সিকিমের মংগন জেলার চিন সীমান্ত সংলগ্ন ওই জনপদের রাস্তা, ঘরবাড়ির নাম-নিশানা যে মুছে দিয়েছে মঙ্গলবার রাতের বিধ্বংসী হড়পা বান। যতদূর চোখ যাচ্ছে দেখে মনে হচ্ছে নতুন করে তিস্তার চর জেগেছে। কোথায় বালি-পাথর ফুঁড়ে উঁকি দিচ্ছে টিনের চালের অংশ বিশেষ। আবার কোথাও বাস অথবা ট্রাকের উপরের সামান্য অংশ। সেখান দিয়ে এখনও বইছে জলের স্রোত। ওই বালি-পাথর টপকে কেউ এগিয়ে যাবে উপায় নেই। কারণ, এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে চোরাবালির মরণফাঁদ। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শুক্রবার পর্যন্ত উদ্ধারকারী দল অনেক চেষ্টা করেও সেখানে পৌঁছতে পারেনি। সিকিম প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মংগন জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চুংথাং শহর। সেখানে আশি শতাংশ পরিকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। বাকি অংশের বাসিন্দারা কেমন আছেন, কেউ জানে না।
জানা গিয়েছে, হড়পা বানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সিকিমের অন্তত ২৫ হাজার মানুষ, ১২০০ টি ঘর ভেসে গিয়েছে, ভেঙে গিয়েছে ১৩টি সেতু, রাস্তাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে কবে সিকিম এই ক্ষত সারিয়ে উঠতে পারবে, তা বলা কঠিন। এখনও পর্যন্ত ২৪১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ২২ টি ত্রাণ শিবিরে ৬৮৭৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং মৃতের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।