পূর্ব বর্ধমান : গোপন কারবার জেনে ফেলায় বাড়ির পরিচারিকাকে খুনের অভিযোগ উঠলো এক মহিলার বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, নির্জন জায়গায় ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই পরিচারিকা-কে কুপিয়ে খুন করে গৃহকর্তি। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটে পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার মন্তেশ্বর থানার মামুদপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মহিলার নাম শান্তি হাজরা(৫০)। এই ঘটনায় কাকলি রায় নামের গৃহকর্তি ওই মহিলাকে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় গ্রামবাসীরা।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বর থানার মামুদপুর গ্রামের হাজরা পাড়ায় বাপের বাড়ি-তে থাকতেন বছর পঞ্চাশের শান্তি হাজরা। বাঁউই খড়মপুরে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় কয়েক দশক আগে মামুদপুর গ্রামে বাপের বাড়িতে চলে আসেন শান্তিদেবী। পেশায় দিনমজুর ভাইপো বাপন হাজরার কাছেই থাকতেন তিনি। নিজের খরচ চালানোর জন্য ওই গ্রামেরই বাসিন্দা কাকলি রায়ের বাড়িতে তিনি পরিচারিকার কাজ করতেন। জানা গিয়েছে, কাকলি রায় স্বামী পরিত্যক্তা।
মামুদপুর গ্রামে তাঁর বাপের বাড়ি। বছর কুড়ি আগে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর থেকেই ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন কাকলী রায়। নিহত মহিলার ভাইপো বাপন হাজরা জানিয়েছেন, সোমবার কাকলী রায় তার পিসিকে বলেন ওনার শরীর খারাপ তাই রাইগ্রামে ডাক্তার দেখাতে যাবেন। তাই পিসিকেও তার সঙ্গে যেতে বলেন। সেইমত সোমবার সন্ধ্যা প্রায় ৬ টা নাগাদ ওই মহিলার সঙ্গে রাইগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তার পিসি। পরে তিনি জানতে পারেন তার পিসি খুন হয়েছেন।
মামুদপুর এবং রাইগ্রামের মাঝামাঝি জায়গায় ইদগাহের কাছে গিয়ে তিনি দেখেন তার পিসির রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, ইদগাহের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের কাকলি দেবীকে ছুটে পালাতে দেখে সন্দেহ হয়। স্থানীয় কয়েকজন যুবক তড়িঘড়ি সেখানে ছুটে গিয়ে শান্তি হাজরা-কে গলার নলি কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কাকলী রায় পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা রক্তমাখা ধারালো অস্ত্রসহ তাঁকে ধরে ফেলে। পরে মহিলাকে পুলিশের হাতে তুলে দেইয় স্থানীয়ারা।
মঙ্গলবার নিহত মহিলার ভাইপো মন্তেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই মহিলাকে গ্রেফতার করে। এদিন মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কাকলি রায় ও তাঁর ছেলে বিভিন্ন বেআইনি কারবারের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের গোপন কারবার জেনে ফেলার কারনেই খুন হতে হয়েছে শান্তি হাজরা-কে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ।