নন্দীগ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর : এক সময় নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে পরিচিতি পেয়েছিলেন আবু তাহের ও সেক সুফিয়ান। পরবর্তীকালে দু’জনেই তৃণমূলের প্রথমসারির নেতা হিসেবে দায়িত্ব পান। তবে বরাবরই এই দুই নেতার বিবাদ নিয়ে চর্চা চলে নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক মহলে। এবার সেই কোন্দল চলে এল এক্কেবারে প্রকাশ্য রাস্তায়। আজ দলের সাংগঠনিক সভায় ডাক না পেয়ে রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়েন আবু তাহের ও তাঁর সঙ্গীরা।
আজ বেলা ২টো নাগাদ পূর্ব ঘোষণা মতোই নন্দীগ্রাম ১ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্বরা বৈঠকে বসেন। খবর পেয়েই তাহের অনুগামীরা দলীয় পার্টি অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেই সময়ই বৈঠকে যোগ দিতে নন্দীগ্রামে হাজির হন দোলা সেন। তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা। তবে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
আবু তাহেরের দাবী, “আজ নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকে যাদের ডাকা হয়েছে তাঁরাই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পতাকা কাঁধে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছিল। অথচ আমাদের ডাকা হয়নি। এখন বিক্ষোভ দেখাতে এলে আমাদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে” দাবী জানিয়েছেন তাহের। তাহেরের উক্তি, “আমরা সুশৃঙ্খল ভাবে দলটা করব। আমি কলকাতায় গিয়ে দিদি’কে সবটা জানাব”।
নন্দীগ্রাম ১নং তৃণমূল কার্যালয়ে এই বিধানসভা এলাকার সমস্ত নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করার কথা। দুপুর ২টোর সময় সেই বৈঠক শুরু হয়। কিন্তু আবু তাহের ও তাঁর অনুগামী একাধিক প্রথম সারির নেতারা এই বৈঠকে ডাক পাননি। তারই প্রতিবাদে পার্টি অফিসের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এরই মাঝে দোলা সেন চলে আসায় তিনিও দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা ব্লক সভাপতি স্বদেশ দাসের অপরসণ চেয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন।
যদিও দোলা সেনের দাবী, “নন্দীগ্রামে কোনও বিক্ষোভ হয়নি। এখানে এসে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি” জানিয়েই দলীয় পার্টি অফিসের অন্দরে চলে যান দোলা সেন। এরপরেই কিছু সময় বাদেই কলকাতায় ফিরে যান দোলা। তবে দোলা সেন অস্বীকার করলেও তাহের সাফ জানান, “আজ আমাদের না ডেকে যারা বৈঠকে বসেছে তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা নেতৃকে বিস্তারিত জানাব। এরাই দিদিকে হারিয়েছিল, তাই এদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে”। যদিও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের নেতৃত্বরা। আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় সেদিকেই নজর থাকবে সবার।