ধর্ষণকাণ্ডে প্রতিবাদীরা ‘নপুংসক’, কবীর সুমনের মন্তব্যে নিন্দার ঝড়

কলকাতা: হাঁসখালি, বোলপুর, নামখানা রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। উত্তাল রাজ্য রাজনীতিতে, ধর্ষণের প্রতিবাদ নয় উল্টে প্রতিবাদীদের একহাত নিলেন কবীর সুমন। ধর্ষণ নিয়ে যাঁরা প্রতিবাদ করছেন তাঁদের চাড্ডি ও মাকু বলেও রাজনীতিক ও প্রবাদপ্রতিম শিল্পী কবীর সুমন।
হাঁসখালির নির্যাতিতা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে। নদিয়ার হাঁসখালিতে ধর্ষণের জেরে অতিরিক্ত রক্তপাতে নাবালিকার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নাম জড়িয়েছে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতার ছেলে ও আত্মীয়দের। এই ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদের ঝড়, তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আপনি রেপ বলবেন, না কি প্রেগনেন্ট বলবেন, না কি লভ অ্যাফেয়ার বলবেন…না কি শরীরটা খারাপ ছিল, না কি কেউ ধরে মেরেছে… আমি পুলিশকে বলেছি, ঘটনাটা কী? ঘটনাটা খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। মেয়েটার নাকি লভ অ্যাফেয়ার ছিল শুনেছি।’
এই মন্তব্যের পরই প্রতিবাদে মুখর সমাজের সমস্ত শ্রেণির মানুষেরা। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। হাঁসখালি থেকে নামখানা, বোলপুর, রাজ্যজুড়ে একাধিক ধর্ষণকাণ্ডে যাঁরা প্রতিবাদ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে বেনজির আক্রমণ করলেন কবীর সুমন। প্রতিবাদীদের নপুংসক বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। এমনকি ধর্ষণ নিয়ে যাঁরা প্রতিবাদ করছেন তাঁদের চাড্ডি ও মাকু বলেও ভর্ৎসনা করলেন কবীর। প্রতিবাদীদের ক্লোন বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না তিনি। যে শিল্পী একসময় কামদুনি কাণ্ড নিয়ে পথে নেমেছিলেন ধর্ষণকাণ্ডে তাঁর এহেন মন্তব্য শুনে হতবাক সকলেই।
বুধবার সামাজিক মাধ্যমে কবীর সুমন লেখেন,‘শুরু হয়ে গেছে ফোনে নপুংশকদের আক্রমণ ‘রাজ্যজুড়ে ধর্ষণের’ বিরুদ্ধে। রাজ্যজুড়ে। গলার আওয়াজ আর কথা শুনেই বোঝা যায় চাড্ডি মাকু। পারফেক্ট ক্লোন। ব্লক করতে করতে ক্লান্ত।’
এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। পোস্টের কমেন্ট সেকশনে তিনি প্রতিবাদীদের ‘রাজনীতিসচেতন বঙ্গ মধ্যবিত্ত’ বলে কটাক্ষ করেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনায় কবীর সুমনকে দেখা গেছে বাংলার জাগ্রত বিবেকের ভূমিকায়। কিন্তু বর্তমানে আনিশকাণ্ড থেকে বগটুইকাণ্ড, কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধেই মুখ খুলতে দেখা যায়নি তাঁকে। এখন কি তাহলে ভেবেচিন্তে অঙ্ক কষে কিছু নির্বাচিত বিষয়েই তিনি সোচ্চার হন আজকাল?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − four =