নির্বাচন ঘিরে রক্তপাত আর হিংসা চলতে থাকলে বন্ধ করা উচিত সেই নির্বাচন, জানালেন বিচারপতি সিনহা

‘নির্বাচন ঘিরে যদি রক্তপাত আর হিংসার চলতে থাকে, তবে সেই নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।‘ বুধবার এমনই মন্তব্য করতে শোনা গেল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে। একই সঙ্গে বিচারপতি সিন্‌হা তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, অশান্তির জন্য যদি কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তবে তাঁদের অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া উচিত কমিশনের। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি সিনহা এও জানান, ‘ভাঙড়ের ২ জন এবং সিপিএমের ১৯ জন প্রার্থী সুযোগ পাবেন ভোটে লড়ার।‘
প্রসঙ্গত, রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন বিরোধীদের একাংশ। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি রাজ্য় নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে এমন ভাষাতেই ভর্ৎসনা করেন।
আদালত সূত্রে খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রার্থীদের নাম কেন নেই এই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আইএসএফ এবং বাম প্রার্থীরা। বুধবার আদালতে তাঁরা জানান, মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শেষ। এমনকি, স্ক্রুটিনির কাজ সম্পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও প্রার্থীদের নাম কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে না। এই প্রসঙ্গেই মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে ভাঙড়ে অশান্তি, বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়া এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করার কথাও শুনানিতে তুলে ধরা হয় মামলকারীদের তরফ থেকে। এই প্রসঙ্গেই বিচারপতি সিন্‌হার মন্তব্য, ‘একটি নির্বাচন ঘিরে এত অভিযোগ হলে এটা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার। রাজ্যের উচিত, আদালতের নির্দেশ মতো আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।‘ এদিন বিরোধীদের মূল অভিযোগ ছিল কমিশনের বিরুদ্ধে। মনোনয়নকে ঘিরে যে অশান্তি হতেদেখা গেছে রাজ্যের নানা জায়গায় সেই প্রসঙ্গে কমিশনকে উদ্দেশেই বিচারপতি সিন্‌হা বলেন, ‘অশান্তির কারণে প্রার্থীরা যদি সময় মতো মনোনয়ন জমা না দিতে পারেন, তবে তাঁদের অতিরিক্ত সময় দেওয়া উচিত।’ যদিও বিচারপতির এই মন্তব্যে রাজ্যের তরফে পাল্টা জানানো হয়,‘শুধুমাত্র একটি এলাকার আটটি ব্লকে কিছু ঘটনা ঘটেছে। অন্য জায়গায় শান্তিপূর্ণ ভাবেই মনোনয়ন জমা পড়েছে।’ এমনকি, রাজ্যে এবারের পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি অনেক কম বলেও আদালতকে জানায় রাজ্য। যা শুনে বিচারপতি সিন্‌হা বলেন, ‘আগে কী হয়েছিল সে সব কথা বলবেন না। এখন কী হচ্ছে আদালত তা নিয়ে চিন্তিত। ১৯৯৮ বা ২০০৩ সালে কী ঘটনা ঘটেছিল এই মামলায় আদালতের তা জানার প্রয়োজন নেই।’
এরই রেশ ধরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করে বিচারপতি সিনহা এও জানান, ‘মারধর, ধর্ষণের হুমকির মতো অভিযোগ নিয়ে অনেকে মামলা করছেন। এগুলো কেন হবে?’ এরই প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশ, ‘এই সব প্রার্থীদের নির্বাচনে লড়তে দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে কমিশনকে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 4 =