হুগলি জেলার আরামবাগে মর্যাদার সঙ্গে রামনবমী পালন এবং রামনবমী উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রবিবার। এদিন দৌলতপুর থেকে শোভাযাত্রা বের হয় এবং সারা শহর পরিক্রমা করে। এই শোভা যাত্রায় পা মেলান আরামবাগের বিজেপি নেতা তথা পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ, সৌভিক কুন্ডু, বিশ্বজিৎ ঘোষ, সুমন তেওয়ারি সহ অন্যান্য বিজেপি নেতা। উল্লেখ্য, শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে পালিত হয় রাম নবমী। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে এদিনই জন্মগ্রহণ করেন শ্রীরামচন্দ্র। চৈত্র নবরাত্রির শেষ দিনে রাম নবমী পালিত হয়।হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে রাম শ্রীবিষ্ণুর অবতার। রামচন্দ্র বিষ্ণুর সপ্তম অবতার ছিলেন বলে মনে করা হয়। ত্রেতা যুগে অযোধ্যার রাজা দশরথ ও রানি কৌশল্যার পুত্র হিসেবে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মর্যাদা পুরুষোত্তম হিসেবেও খ্যাত।
রামায়ন থেকে জানা গিয়েছে, সূর্যবংশীয় রাজা দশরথের তিন মহিষী ছিলেন কৌশল্যা, কৈকেয়ী এবং সুমিত্রা। কিন্তু তাঁর কোনও সন্তান ছিল না। একদা বর্ষার রাতে শিকারে বেরিয়ে সরযূ নদীর তীরে একটি শব্দ শুনে তাঁর মনে হয় যে কোনও পশু জল পান করছে। রাজা দশরথ শব্দবেধী বাণ ছুঁড়ে আর্তনাদ শোনার পর বুঝতে পারেন যে তিনি নরহত্যা করেছেন। সেই শিকার ছিলেন অন্ধ পিতামাতার একমাত্র অবলম্বন শ্রবণমুনি। পুত্রের মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত ঋষি শাপ দেন দশরথকে, তাঁরও পুত্রসুখ লাভ হবে না।দশরথকে এই অপুত্রক দশা থেকে উদ্ধার করেন ঋষ্যশৃঙ্গ ঋষি। তিনি পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করলে এক দেবপুরুষ অগ্নি থেকে আবির্ভূত হয়ে চরুপাত্র রাজার হাতে তুলে দেন। দশরথ তা দুই ভাগে বন্টন করেন কৌশল্যা এবং কৈকেয়ীর মধ্যে। এই দুই মহিষী নিজেদের ভাগ থেকে আবার অর্ধেকটা দেন সুমিত্রাকে। কালক্রমে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের মধ্যাহ্নে কৌশল্যার গর্ভে রাম, কৈকেয়ীর গর্ভে ভরত, সুমিত্রার গর্ভে লক্ষ্মণ এবং শত্রুঘ্ন জন্মগ্রহণ করেন। এর মধ্যে পূর্ণাবতার এবং জ্যেষ্ঠ হওয়ার কারণে রামের নামে তিথিটি রামনবমী বলে পরিচিত।এদিন সারা হুগলি জেলা জুড়েই বিজেপি নেতৃত্ব কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে রাম নবমী পালনে সামিল হন।এই বিষয়ে আরামবাগ বিজেপির সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক বিমান ঘোষ জানান, এদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে আরামবাগে রাম নবমী পালন করা হয়।এই উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা বের করা হয়।অপরদিকে বর্তমান আরামবাগ বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি সুশান্ত কুমার বেরা জানান, এই দিনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারা দেশ জুড়ে রীতি মেনে ভগবান রামের পুজোপাঠ হচ্ছে।