রাজ্যপালকে শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনা, তবে কুর্সি ফেরৎ পেলেন না উদ্ধব

বিধায়ক পদ খারিজ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেল উদ্ধবসেনা। শিণ্ডে শিবিরের ১৫ জন বিধায়করের সদস্যপদ বাতিলের যে আবেদন উদ্ধবসেনার তরফে করা হয়েছে, তা খারিজ করে দিল আদালত। এর ফলে সরকার চালাতে একনাথ শিন্ডের আর কোনও বাধা রইল না। বৃহস্পতিবার বিধায়ক পদ বাতিল সংক্রান্ত মামলার পর্যবেক্ষণে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, শিবসেনার সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কদের সমর্থন রয়েছে বিদ্রোহী একনাথ শিণ্ডের দিকে।
২০২২-এর জুনে মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা বদলের সাক্ষী ছিল গোটা দেশ। উদ্ধব ঠাকরে শিবির থেকে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে-সহ ১৬ জন বিধায়ক দলত্যাগ করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগু হবে কি না তা নিয়েই মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলারই শুনানি হয় বৃহস্পতিবার। সেই মামলার শুনানি একাধিক বিষয় উঠে আসে দেশের শীর্ষ আদালতে। দলত্যাগ আইন প্রণনয়ে স্পিকার ভূমিকা, সরকার বদলের সময় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও এদিন প্রশ্ন ওঠে শীর্ষ আদালতে।
২০২২-এর জুনে যখন একের পর এক শিবসেনা বিধায়ক ঠাকরে শিবির ছেড়ে শিণ্ডে শিবিরে নাম লেখান তখন আস্থাভোটে যাননি উদ্ধব। উল্টে পদত্যাগ করেন। ঠাকরে যেহেতু আস্থাভোটের আগেই পদত্যাগ করেছিলেন, তাই সেই অবস্থা পুনরুদ্ধার করা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে সম্ভব নয় বলে বৃহস্পতিবার জানানো হয়। আদালতের এই বক্তব্যের জেরে কিছুটা হলেও স্বস্তি পান একনাথ শিণ্ডে।
তবে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক ডামাডোলের সময়ে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে দেশের শীর্ষ আদালতে। রাজনৈতিক পরিসরে রাজ্যপালের প্রবেশ করা উচিত নয় বলে মত দেশের শীর্ষ আদালতের। সে সময় রাজ্যপাল যথাযথ ভূমিকা পালন করেননি বলেও মত সুপ্রিম কোর্টের। রাজ্যপাল আস্থাভোট ডেকে ভুল করেছিলেন বলেও এদিন জানানো হয় শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে। পাশাপাশি এও জানানো হয়, রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীন বিবাদ মেটাতে আস্থাভোট কোনও মাধ্যম হতে পারে না। উদ্ধব ঠাকরে সরকার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে বলে রাজ্যপাল রিপোর্ট যে উল্লেখ করেছিলেন, তা পদ্ধতিগত ভুল বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত।
এরই পাশাপাশি মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক তরজা যখন চরমে তখন শিণ্ডে শিবিরের গোগাওয়ালেকে শিবসেনা দলের প্রধান হুইপ করেন তৎকালীন স্পিকার। সেই সিদ্ধান্তও ভুল ছিল বলে এদিন জানায় শীর্ষ আদালত। এ ব্যাপারে দেশের শীর্ষ আদলত এও বলে, রাজনৈতিক দলই হুইপ মনোনীত করতে পারে।
এরই পাশাপাশি দলত্যাগ করে অন্য শিবিরে গেলে জনপ্রতিনিধিদের উপর দলত্যাগী আইন প্রণয়নের বিষয়টি এদিন উত্থাপিত হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে উঠে আসে ২০১৬ সালে অরুণাচল প্রদেশে ক্ষমতার পালাবদল নিয়ে ‘নাবাম রেবিয়া বনাম ডেপুটি স্পিকার’ মামলার প্রসঙ্গ। স্পিকারের ভূমিকার বিষয়টি নিয়ে বৃহত্তর বেঞ্চে আলোচনার জন্য পাঠিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 4 =