এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। প্যাট কামিন্সকে দেখে এই কথাটাই বলা যায়। বল হাতে শেষ ওভারে একগুচ্ছ রান দিয়ে ম্যাচটাকে কঠিন করে তুলেছিলেন। কিন্তু প্রাক্তন নাইট অধিনায়ক ব্যাট হাতে পুনেতে ঝড় তুললেন। টপ অর্ডার আর মিডল অর্ডারদের খুইয়ে যখন কেকেআর, তখন মাঠে নেমে মাত্র ৩ ওভারের ভিতরেই খেল খতম করে দিলেন। ড্যানিয়েল স্যামসের এক ওভারে নিলেন ৩৫ রান। আর ওখানেই খেলা শেষ। একটা সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচটা উত্তেজক হতে পারে। কিন্তু প্যাট কামিন্স সমস্ত সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে নাইটদের মূল্যবান ২ পয়েন্ট এনে দিলেন। এ বারের আইপিএলে প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই বুঝিয়ে দিলেন, কামিন্স এ বার রাজ করতে এসেছেন। কামিন্স ঝড় দেখে কোনও কুলই খুঁজে পেলেন না রোহিত শর্মাদের মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কেকেআর অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। নাইট দলে এদিন দুটো পরিবর্তন হয়।
টিম সাউদির জায়গায় খেলেন প্যাট কামিন্স। শিবম মাভির জায়গায় দলে আসেন রাশিখ সালাম। উইকেটে শুরু থেকেই পেস আর বাউন্স পাচ্ছিলেন বোলাররা। আর সেটাকেই কাজে লাগান উমেশ যাদব, প্যাট কামিন্সরা। এ দিনও ব্যর্থ মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ব্যক্তিগত ৩ রানের মাথায় আউট হন হিটম্যান। উমেশ যাদবের বলে স্যাম বিলিংসের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। নবাগত ডিওয়াল্ট ব্রেভিস এসে প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারে। ‘বেবি এবি’ বুঝিয়ে দেন তিনিও আইপিএলে রাজত্ব করতে এসেছেন। হতে পারেন ভবিষ্যতের তারকাও। ১৯ বলে ২৯ রানের ঝোড়ো ব্যাটিং করেন ব্রেভিস। বরুণ চক্রবর্তীর বলে স্টাম্প আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ব্রেভিস। এর কিছু পরেই প্যাট কামিন্সের বলে শ্রেয়স আইয়ারের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ঈশান কিশান। এ দিন ১৪ রানে আউট হন ঈশান।
৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে একটা সময় চাপে পড়ে যায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন সূর্যকুমার যাদব আর তিলক বর্মা। তিলক এবারের আইপিএলের আবিষ্কার। আর সূর্যকুমার এ বারের আইপিএলে প্রথম মাঠে নেমেই হাফসেঞ্চুরি করলেন। চতুর্থ উইকেটের জুটিতে ওঠে ৮৩ রান। তবে তিলক বর্মার ক্যাচ রাহানে না ফেললে মুম্বইয়ের স্কোরও ১৫০ পার করত কিনা সন্দেহ। ৫২ রানে আউট হন সূর্যকুমার। ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিলক। তবে শেষ ওভারে ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন কায়রন পোলার্ড। গত ম্যাচে স্লো ব্যাটিংয়ের ফলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। প্যাট কামিন্সের শেষ ওভারে ৫ বলে ২২ রানের ঝোড়ো ইনিংস আসে পোলার্ডের ব্যাট থাকে। তার সুবাদেই ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান তোলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
১৬২ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই অজিঙ্কা রাহানের উইকেট হারায় কেকেআর। টিমাল মিলসের বলে ৭ রানে আউট হন নাইট ওপেনার। এরপর আউট হন নাইট অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। কেকেআর ক্যাপ্টেনকে এখনও আইপিএলে সে ভাবে ছন্দে পাওয়া গেল না। ড্যানিয়েল স্যামসের বলে ১০ রানে আউট হন শ্রেয়স। শুরুতেই জোড়া উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কেকেআর। ব্যক্তিগত ১৭ রানে আউট হন স্যাম বিলিংস। মুরুগ্গান অশ্বিনের বলে আউট হন বিলিংস। নীতীশ রানাকে ৮ রানে ফিরিয়ে ফের ঝটকা দেন অশ্বিন। আগের ম্যাচও মতো এ দিনও ক্রিজে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজে দেখা যায় আন্দ্রে রাসেলকে। কিন্তু একটা ছয় আর একটা চারেই তাঁর ইনিংস শেষ। মিলসের বলে ১১ রানে আউট রাসেল। তবে নাইটদের কাজটা সহজ করে দেন প্যাট কামিন্স। বল হাতে শেষ ওভারে তাঁর বলে ঝড় তুলেছিলেন পোলার্ড। ব্যাট হাতে মোক্ষম জবাব প্যাট কামিন্সের। ক্রিজে নেমেই ব্যাটে ঝড় তুললেন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার। বিধ্বংসী কামিন্সেই উড়ে যায় মুম্বই। ১৪ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন কামিন্স। আইপিএলের ইতিহাসে লোকেশ রাহুলের সঙ্গে এক আসনে বসলেন নাইট ক্রিকেটার।