তিনদিন ইডি-র হেপাজতে থাকতে হবে অনুব্রত কন্যা সুকন্যাকে, এমনটাই নির্দেশ দিল্লি আদালতের। গরুপাচার মামলায় ইডি-র হাতে বুধবার সন্ধেয় গ্রেপ্তার হন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডল। এরপর বৃহস্পতিবার পেশ করা হয় দিল্লির রাউস এভিনিউ কোর্টে। এদিকে ইডি সূত্রে খবর, এদিন সকালে একদফা স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর এদিন দুপুর প্রায় তিনটে নাগাদ অনুব্রত-কন্যা সুকন্যাকে আদালতে নিয়ে আসেন ইডির মহিলা আধিকারিকেরা। এরপর রাউস এভিনিউ কোর্টের বিচারক রঘুবীর সিংয়ের এজলাসে অতি অল্প সময়ের শুনানি হয়। মাত্র দশ মিনিটেরও কম সময়ে শুনানি পর্ব মিটে যায় এবং বিচারক সুকন্যা তিনদিনের ইডি হেপাজজের নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে খবর, এদিন সুকন্যাকে দিল্লির রাউস এভিনিউ কোর্টে পেশ করে তাঁকে নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকেরা। ইডির তরফে এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী নীতেশ রানা। অন্যদিকে সুকন্যার আইনজীবী হিসেবে আদালতে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় অমিত কুমারকে। সুকন্যার আইনজীবী এদিন ইডি-র এই হেপাজতের বিরোধিতা করেন। তারই রেশ ধরে বিচারক রঘুবীর সিং এদিন আদালতে সুকন্যার আইনজীবী অমিত কুমারকে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি ইডি হেপাজতের বিরোধিতা করছেন। জবাবে সুকন্যার আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল তদন্তকারী সংস্থাকে সবরকমভাবে সহযোগিতা করছেন এবং করেছেন। এর আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি হাজিরা দিতে পারেননি এবং সেই কথা আইনজীবী মারফৎ ইডিকে জানানোও হয়েছিল। এরই পাশাপাশি আইনজীবী অমিত কুমারের বক্তব্য, ‘সুকন্যাকে প্রথম দফায় টানা তিনদিন, দ্বিতীয় দফায় বুধবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যা যা নথিপত্র চাওয়া হয়েছিল সব জমা দেওয়া হয়েছে।’ আর এখানেই আইনজীবী অমিতকুমার প্রশ্ন তোলেন, তাহলে অনুব্ত কন্যাকে ইডি-র হেপাজতে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।
অন্যদিকে প্রায় একই প্রশ্ন করা হয় ইডির আইনজীবী নীতেশ রানাকেও। এখানে বিচারকের জিজ্ঞাস্য, কেন সুকন্যাকে ইডির হেপাজতে নেওয়ার প্রয়োজন তা নিয়ে। বিচারকের প্রশ্নে ইডির আইনজীবী জানান, ‘সুকন্যার বিপুল সম্পত্তির উৎস কি, কোথায় বিনিয়োগ হয়েছে টাকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের বিষয়ে বিস্তারিত জেরার প্রয়োজন রয়েছে। এর আগে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, প্রত্যেকেই সুকন্যার নাম উল্লেখ করেছেন।‘
দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এরপরই বিচারক সুকন্যাকে তিনদিনের ইডি হেপাজতের নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, সুকন্যার আইনজীবী আদালতে এও আবেদন জানান, যাতে ইডির হেফাজতে থাকাকালীন প্রতিদিন আধ ঘণ্টাকে করে সুকন্যাকে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়। যদিও সেই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দিতে দেখা যায়নি বিচারককে।