কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় বৃহস্পতিবার কোনও শুনানি না হলেও আদলতে জমা পড়ল এই সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট। এদিকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় আপাতত হাইকোর্টে আপাতত হচ্ছে না শুনানি। কারণ, সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পরই ফের শুনানি হবে কলকাতা হাইকোর্টে। তবে এদিন সমস্ত রিপোর্ট আপাতত রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা রাখা হয়। আদালতের নির্দেশ মতো, এদিন রাজ্যের তরফ থেকে জেলের অরিজিনাল রেজিস্ট্রার কপি, সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ সহ তিনটি হার্ড ডিস্ক জমা দেওয়া হয়। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, মামলার পরবর্তী শুনানি ২৮ এপ্রিল।
নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের অভিযোগ ছিল, তাঁকে জেরা করার সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কুন্তল ঘোষ সেই বিষয়ে চিঠিও দেন আলিপুর আদালতে। সেই চিঠির বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলে উল্লেখ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। সেই পর্যবেক্ষণে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয় শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে। এখানেই শেষ নয়, আলিপুর আদালতে চিঠি দেওয়ার পর হেস্টিংস থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন কুন্তল ঘোষ। এরপরই ইডি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। আদালতে ইডি-র তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয়, কুন্তলের অভিযোগ ঠিক কী সেই ব্যাপারে। আর এমামলাতেই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, প্রয়োজনে অভিষেককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে। উল্লেখ করা হয়েছিল, ঘটনাচক্রে কুন্তল ঘোষের একটি বক্তব্যের সঙ্গে অভিষেকের বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে রাজ্যের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ সহ বিভিন্ন প্রমাণ তলব করেচিল হাইকোর্ট।
এরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসীমা, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালার ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিকে এদিন আদালতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ। বৃহস্পতিবার জেল হেফাজত শেষে বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে কুন্তলকে পেশ করা হলে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে কুন্তল দাবি করেন, ‘বিজেপি মুখপাত্র এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সির মুখপাত্র একই। এবার বুঝে নিন তদন্ত কোনদিকে এগোচ্ছে।’ তবে এটাই প্রথমবার নয়, এর আগেও ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করতে দেখা গেছে কুন্তলকে। শুধু কুন্তলই নয়, এই অভিযোগ বারবার শাসক দলের তরফ থেকেও করছেন নেতামন্ত্রীরাও। তবে কুন্তলের এই অভিযোগ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই কুন্তলের এদিনের দাবি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জোর চর্চা। কুন্তল ইচ্ছাকৃতভাবে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।
এদিন এবার আংটিকাণ্ড নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করতে শোনা যায় হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে। বৃহস্পতিবার তাঁকে আলিপুর আদালতে পেশ করার আগে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানেই তিনি বলেন, ‘আমার হাতে আংটি নেই। হাতভর্তি ঘামাচি আছে।’ কাকে উদ্দেশ্য করে তাঁর এই মন্তব্য তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি, হওয়ার কথাও নয়।