বিনা দোষে তিন মাস জেল! তদন্তের নির্দেশ হাই কোর্টের

কলকাতা:শুধুমাত্র পুলিশের ভুলে নির্দোষের ৩ মাস জেলের অভিযোগ শুনে বিস্মিত বিচারপতি দেবাংশু বসাক। হাইকোর্টে ভুল স্বীকার করেন তদন্তকারী অফিসার। স্তম্ভিত বিচারপতি দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন ওই তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে শুরু করতে হবে বিভাগীয় তদন্ত।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত অভিমুখে যাবার সময় ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হয় শামিম হোসেন। ঘটনার তদন্তে নেমে ৭ জানুয়ারি পাতিরাম থানার পুলিশ পিন্টু মালিকের বাড়িতে চড়াও হয়। অভিযোগ তিনিও ফেনসিডিল পাচারের সঙ্গে যুক্ত। ওইদিনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট পেশ করে। চার্জশিটে পিন্টু মালিকে অভিযুক্ত দেখানো হয়। পিন্টু কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানায়। হাইকোর্টের নির্দেশে সোমবার আদালতে হাজির হন তদন্তকারী অফিসার অসীমকুমার ঘোষ।

বিচারপতি দেবাংশু বসাক জানতে চান শামিম-এর বয়ানে বা সাক্ষীদের বয়ানেও পিন্টু মালির নামের উল্লেখ নেই। তাহলে কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হল? কেন চার্জশিটে তাঁর নাম এল? সরকারি আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন আদালতের কাছে স্বীকার করেন এটা সম্পূর্ণভাবে তদন্তকারী অফিসারদের গাফিলতি। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের মন্তব্য, একজন তদন্তকারী অফিসারের ভুলের জন্য এক নির্দোষকে ৩ মাস জেল খাটতে হবে! তদন্তকারী অফিসারকে বিচারপতির প্রশ্ন, ৩ মাস আগে ফেনসিডিল উদ্ধারের সময় অভিযুক্ত শামিমের পোশাক কী ছিল? তদন্তকারী অফিসার অসীমকুমার ঘোষ আদালতকে জানান, পরনে ট্রাউজার আর গেঞ্জি ছিল যার রং ছিল কালো-সাদা।বিচারপতি বসাকের ধমক তদন্তকারী অফিসারকে, ৩ মাস আগে কী রঙের জামা পড়েছিল অভিযুক্ত, সেটা মনে রাখতে পারলেন আর পিন্টু মালির নাম লেখার সময় আপনার ভুল হয়ে গেল! এটা কী করে সম্ভব। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের মন্তব্য এমন তদন্তকারী অফিসারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।পাশাপাশি আবেদনকারীর ক্ষতিপূরণ তদন্তকারী অফিসারের পকেট থেকে নেওয়া উচিত।

এই সঙ্গে বিচারপতি বলেন, কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল, সে বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হবে কলকাতা হাইকোর্টকে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থেকেও কেন চার্জশিটে নাম রইল পিন্টু মালির তা ওই রিপোর্টে উল্লেখ থাকতে হবে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 10 =