সোমনাথ মুখার্জি
খবরের কাগজে বা টিভির পর্দায় চোখ রাখলেই এখন হামেশাই দেখা যায় কোথাও প্রেমিক তার প্রেমিকার মুখে অ্যাসিড ঢেলেছে বা কোথাও ধর্ষণের কাণ্ড ঘটছে। কিন্তু ভালোবাসা আজও বিদ্যমান। এমনই এক দৃষ্টান্তের ছবি সামনে এল অন্ডালের পড়াশকোল পদ্মাবতী মন্দিরের। প্রেমিকা শারীরিকভাবে অক্ষম দু’পায়ে ভালোভাবে চলতেও পারেন না জেনেও তাঁকেই বিয়ে করলেন প্রেমিক। তবে পালিয়ে গিয়ে নয় দুই পরিবারে মতেই হয় এই বিয়ের অনুষ্ঠান।
জানা গিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুরের বাসিন্দা মানতি বাউরির সাঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক হয় রানিগঞ্জের নীমচার বাসিন্দা পেশায় টোটো চালক রাহুল গুপ্তার। বছরখানেকের ভালোবাসার সম্পর্ককে বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ করলেন রাহুল। রাহুল মানতির বিয়েতে পরিবারের লোকেরাও উপস্থিত ছিল এদিন মন্দির চত্বরে। শুক্রবার সরস্বতী পুজোর পরের দিন যেদিন বাঙালির মাছ ভাত উৎসবে মুখরিত এমনই একটি শুভক্ষণে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হল রাহুল ও মানতি। বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসাবে পরিচিত সরস্বতী পুজোর পরের দিনে রাহুল ও মানতি প্রেমিক প্রেমিকাদের দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন খনি অঞ্চলে। পদ্মাবতী মায়ের মন্দিরে একেবারে প্রথা মেনে বিয়ে হল রাহুল গুপ্তার সঙ্গে মানতি বাউরির। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানতি ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছে মায়ের সঙ্গেই থাকে সে। অন্যদিকে রাহুলের বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। দম্পতি শুধুই একটাই চাওয়া সকলের কাছে তারা যেন আগামী দিনে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
যে সময়কালে দাঁড়িয়ে আমরা বিশ্বাসঘাতকতার ছবি আখছার দেখে থাকি, ঠিক সেই সময় ভালোবাসার নিবিড় বন্ধনের ছবি দেখে আপ্লুত মন্দিরের পুরোহিত থেকে এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনা প্রসঙ্গে রাহুল বাবু বলেন, তিনি হৃদয় দিয়ে ভালোবেসেছেন মানতিকে। তিনি জানান, তার কাছে মানতির শারীরিক অক্ষমতার বিষয়ে কোনদিনও ভাবেননি। কারণ তিনি শুধু মন দিয়ে মানতিকে ভালোবেসেছেন। আজ ভালবাসাকে পূর্ণরূপ দিতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন তিনি। রাহুলও মানতি সকলের কাছে আবেদন করেন, যেন তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়। আমরাও এই নবদম্পতির আগামী জীবন সুখকর হোক এই কামনাই করি।