ফের নিয়োগের ঘটনায় আরও এক বিস্ফোরক অভিযোগ। এক শিক্ষক, যিনি গত তিন বছর ধরে চাকরি করছেন, তাঁর নিয়োগ নিয়ে উঠে গেল প্রশ্ন। এক চাকরি প্রার্থীর সুপারিশপত্র নকল করে ও আর এক চাকরি প্রার্থীর নিয়োগপত্র নকল করে তিনি চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। মুর্শিদাবাদের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তভার রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তর সিআইডি-কে দিতে চায় আদালত। সে কারণেই ডিআইজি সিআইডি-কে তলবও করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
ঘটনার সূত্রপাত সোমা রায় নামে এক চাকরি প্রার্থী এই অভিযোগ জানানোর পরই। তিনি আরটিআই করে এই তথ্য জানতে পেরেছেন বলে দাবি করেন। এরপরই মামলা করেন তিনি। বুধবার বিচারপতি বসুর বেঞ্চে শুনানি ছিল সেই মামলার। এরপর বুধবার এই অভিযোগ শুনে কার্যত অবাক হয়ে যান তিনি। আরও এমন অভিযোগ আছে কি না, সেই আশঙ্কাও প্রকাশ করেন বিচারপতি। অবৈধভাবে তালিকায় নাম সামনে আনার অভিযোগ উঠেছে আগে। সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। তবে এমন অভিযোগ প্রথম।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের গোথা এ আর হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক আশিস তিওয়ারি। অভিযোগ, তাঁরই স্কুলে চাকরি করেন তাঁর ছেলে অনিমেষ তিওয়ারি। ভূগোলের শিক্ষক অনিমেষ ভূগোল বিষয়ে পরীক্ষাই দেননি বলে অভিযোগ। এদিন আদালতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মেধাতালিকাতেই নাম ছিল না অনিমেষের, কোনও সুপারিশও হয়নি তাঁর নামে। আসলে আতাউর রহমানের নামে সুপারিশ করা হয়েছিল বলে দাবি পর্ষদের। শুধু তাই নয়, অরবিন্দ মাইতি নামে আর এক চাকরি প্রার্থীর নিয়োগপত্র নকল করে চাকরি পেয়েছেন বলে বলেই অভিযোগ অনিমেষ তিওয়ারির বিরুদ্ধে।
এমন অভিযোগ শুনে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বুধবার আদালতে জানান, ‘দেখে অবাক হচ্ছি।‘ এ প্রশ্নও তোলেন, এমন আর কত হয়েছে কি না তা নিয়ে। কারণ,হেড মাস্টার জানেন না, যাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে তিনি তথ্য বিকৃত করছেন কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করতে দেখা যায় বিচারপতি বসুকে। আর এখানেই তাঁর প্রশ্ন, তাহলে ছাত্রদের ভবিষ্যত কী এ নিয়েও। ২০১৬ সালের এসএলএসটি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় ইতিমধ্যেই তদন্ত করছে সিবিআই। তাই বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু চান, এই মামলার তদন্ত করুক সিআইডি। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ডিআইজি সিআইডি আদালতে গিয়ে জানাবেন তাঁর এই ঘটনার তদন্ত করবেন কি না।