কলেজ কর্তৃপক্ষ আর স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ ছাডা়ই হল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রসংসদ নির্বাচন

কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ ছাড়াই বৃহস্পতিবার হয়ে গেল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রসংসদ নির্বাচন।নিজেদের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ে ভোটগ্রহণ করেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তবে, এই ভোট বা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আদৌ কোনও আইনি বৈধ্যতা রয়েছে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। পড়ুয়াদের এই আন্দোলনে প্রথম থেকে এআইডিএসও শামিল হলেও, এই ভোটে তারা অংশ নেয়নি। এই প্রসঙ্গে সংগঠনের প্রতিনিধি অর্ণব তালুকদার জানান, ‘আমরা শুরু থেকে আন্দোলনের পাশে ছিলাম। কিন্তু এদিন যে ভাবে নির্বাচন হচ্ছে তা, অবৈধ। কারণ, এই ভাবে ইউনিয়ন নিজেদের দাবি আদায় কর‍তে পারবে না। সেই কারণেই এই নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত।’

এদিকে বুধবার সন্ধেবেলাতেই নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা।চারটি বর্ষের পাঁচটি করে মোট ২০ টি পদের জন্য ভোটগ্রহণ হয় এদিন।প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ৩১ জন প্রার্থী। সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। প্রত্যেকটি বর্ষের জন্য তৈরি রাখাহয়েছিল পৃথক পৃথক ব্যালট বাক্স। এখন অপেক্ষা ভোট গণনার।

এদিকে সূত্রে খবর, এদিন মোট ভোটার সংখ্যা ছিল এক হাজার।পড়ুয়াদের তরফ থেকে জানানো হয়, ৮ পুলিশকর্মীর নজরদারিতেই এদিন ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়। এছাড়াও, পর্যবেক্ষক হিসাবে ছিলেন চিকিৎসক বিনায়ক সেন এবং অম্বিকেশ মহাপাত্র, সুজাত ভদ্র, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়।

এদিনের এই নির্বাচনের ঘটনায় ভোটের পক্ষে আন্দোলনরত পড়ুয়ারা জানান, ‘মেডিক্যাল কলেজের ডেমোক্র্যাটিক অবস্থা ফেরানোর দায় পড়ুয়াদের। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কলেজের এআইডিএসও-র প্রতিনিধিদের বক্তব্য, এই পদক্ষেপ আন্দোলনের গুরুত্ব কমিয়ে দেবে, তা মনে হয় না। মেডিক্যাল কলেজ-সহ আরও বিভিন্ন কলেজে দেখা গেছে , কাউকে তোয়াক্কা না করে নিজেরাই নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন।আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে, হাসপাতালের রোগী পরিষেবা, পড়ুয়াদের ক্লাস-সহ সব কিছুই বিঘ্নিত হতো।’

প্রসঙ্গত,  বৃহস্পতিবার  অর্থাৎ ২২ ডিসেম্বরই মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।তবে  আচমকাই কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি বাতিল করে দেন। কবে নির্বাচন হবে, সে বিষয়েও ছাত্রদের কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য দেননি তাঁরা।এরপরেই, এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। পরে শুরু করেন অনশন।অনশন চলাকালীন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেন এবং পড়ুয়াদের অনশন তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু পড়ুয়ারা অনড় থাকেন। শেষ পর্যন্ত সোমবার বিকেলে ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা অনশন তুলে নেবেন এবং নিজেরাই নির্দিষ্ট দিনে নির্বাচনের আয়োজন করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − three =