প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো হবে কি না তা নিয়ে তরজা তুঙ্গে। এ নিয়ে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিটের তরফে তা নিয়ে ট্যুইটারে একটি ভোটও করা হয়। আপাতত সেই ভোটের যা রেডাল্ট সামনে আসছে তাতে ছাত্র ইউনিয়নের বক্তব্য, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাগদেবীর আরাধনা হবে। কারণ, ভোটের ফলে ৮৯ শতাংশ পড়েছে পুজোর পক্ষে। বাকি ১১ শতাংশ ভোট দিয়েছেন না অপশনে। আর এই প্রসঙ্গে সোমবার সরব হতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে। তিনি জানান, ‘প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পুজোর জন্য জোরাজুরির বিষয় নেই। পুজো করতে চেয়েছে ওরা। তবে যারা বলছেন ওখানে হয় না, তাঁদেরকেও সম্মান দিয়েছি। এই নিয়ে জোরাজুরির বিষয় নেই।’ এদিকে প্রথম থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের প্রেসিডেন্সি ইউনিটের দাবি ছিল, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজো হবে, দেবী সরস্বতীর আরাধনা হবে এর মধ্যে নেতিবাচক কোনও মতামত থাকতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ভাবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা সম্ভব নয়, এমনই জানিয়েছেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস।’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আরও দাবি, ‘অথারিটি স্পষ্টভাবে যে পয়েন্টটি তুলে ধরেছেন, তা হল প্রেসিডেন্সি সেক্যুলার ক্যাম্পাস।’ আর এখানেই টিএমসিপির বক্তব্য, ‘অথারিটি হয়ত সেক্যুলার শব্দের সঠিক সাংবিধানিক অর্থ জানেন না। কারণ, সংবিধানে বলা আছে, সেক্যুলারিজম ইজ এ পজিটিভ কনসেপ্ট। সেখানে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজেদের মতো আচার-অনুষ্ঠান, উৎসব পালন করতে পারবে। সেখানে কোথাও বলা নেই কোনও মানুষ তার নিজস্ব ধর্মীয় আচরণ পালন করতে পারবে না।’ এরই রেশ ধরে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পিইউটিএমসিপি-র তরফ থেকে প্রশ্ন, ‘তারা কি সেক্যুলার ক্যাম্পাসের ধোঁয়াশার আড়ালে বাম সংঠনের চাপে নতিস্বীকার করেছেন? কারণ এরকম উদাহরণ ইতিহাসে আমরা দেখতে পেয়েছি যেখানে সুভাষ চক্রবর্তী মহাপীঠ তারাপীঠে পুজো দিতে গিয়েছিলেন বলে তাঁকে সিপিএম দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অথারিটি কখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবিরুদ্ধ আচরণ করতে পারেন না৷ আমরা মনে করি অথারিটি হয়তো চানও না। দীর্ঘ ২০৬ বছরের ইতিহাসে বাম একনায়কতন্ত্রের অত্যাচারকে আসলে অথারিটি ভয় পাচ্ছে।’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র জানান, ‘এরকম ভয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্রছাত্রী অযথা পায়। তাদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে বলছি ওদের দিন চলে গেছে, আর ফিরবে না, নিজেরা ঘুরে দাঁড়াও, সত্যের জন্য দাঁড়াও। অকারণে ওদের অযৌক্তিক মানসিকতাকে, কাজকে সমর্থন করা বন্ধ করো। তোমরা পালটা প্রশ্ন করো দেখবে উত্তর দিতে পারবে না ওরা, মুখ বন্ধ। শিক্ষাঙ্গনে সরস্বতী পুজো কেউ আটকাতে পারবে না। অথারিটিকে অসংখ্য চিঠি, মেইল করা হয়েছে, রিপ্লাই হিসেবে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানবিরুদ্ধ আচরণ পেয়েছি আমরা। প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজো বহু প্রাক্তনীরাও চায়, কিন্তু ওই যে মুখ ফুটে কেউ বলতে সাহস পায় না। তাদের প্রত্যেকের প্রতিনিধি হয়ে আমরা, প্রেসিডেন্সির সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা, জোর গলায় বলছি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি সরস্বতী পুজো করে দেখাবে। যেহেতু ছাত্রসংসদ এই পদক্ষেপ নিতে অক্ষম সাধারণ ছাত্রছাত্রীর কথা ভেবে তাই এই শুভ উদ্যোগে হাত লাগাল পিইউটিমসিপি ।’ একইসঙ্গে কুণালের বার্তা, এই শুভ সূচনায় সকলকে আমরা পাশে চাই।