নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: ৫৫ বছর বয়সি সুচিত্রা মুখোপাধ্যায় ওরফে ‘পুতুন দি’ বাকি পাঁচটা মহিলার মতোই, ঘরের কাজ সামলানো থেকে শুরু করে অন্যান্য সব কাজই করে থাকেন। তবে তাঁর ছেলে অভিষেক মুখোপাধ্যায়ের উচ্চশিক্ষার জন্য এই বয়সে টোটোর হ্যান্ডেল ধরতে হয়েছে তাঁকে।
২০১৫ সাল থেকে বাঁকুড়া শহরের লক্ষতোরা টোটো স্ট্যান্ডে দিনের পর দিন নিজের ভাঙাচোরা টোটোটি নিয়ে হাজির হন নিয়মিত। ঝড় জল উপেক্ষা করে টোটোবোঝাই করে এদিক-ওদিক নিয়ে যান প্যাসেঞ্জার। ভালো নাম সুচিত্রা হলেও সকলের কাছে ‘পুতুন দি’ নামেই পরিচিত এই মহিলা টোটোচালক। তৎকালীন সময়ে পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন সুচিত্রা মুখোপাধ্যায় ওরফে ‘পুতুন দি’। বর্তমানে টোটো চালিয়েই চলছে তাঁর সংসার। বাঁকুড়া শহরের সানবাঁধা এলাকার বাসিন্দা সুচিত্রা মুখোপাধ্যায়ের। বাড়ির সামনেই একটি টিনের চালের তলায় রাখা থাকে তাঁর জরাজীর্ণ সবুজ রঙের বিখ্যাত টোটো।
টোটোচালকদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গিয়েছে টোটোর বাজারে যথেষ্ট প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতার মধ্যে একজন মহিলা হয়ে ২০১৫ সাল থেকে টিকে থাকা চাট্টিখানি কথা নয়। নতুন প্রজন্মের টোটোচালকরা সিনিয়র এই মহিলা টোটোচালকের কাছে বিভিন্ন টিপস অ্যান্ড ট্রিকস নেন বলেই জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, যাত্রীরা বিশেষ করে মহিলা যাত্রীরা পুতুন দি’র জীবন যুদ্ধ দেখে অনুপ্রাণিত হন।
পঞ্চায়েতে সমিতির খাদ্য দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন সুচিত্রা মুখোপাধ্যায় ওরফে ‘™ুতুন দি’। সেই সময় কেমন ছিল পঞ্চায়েত জানতে চাওয়ায় তিনি জানান, অর্থের পরিমাণ অনেকটাই কম ছিল। সেই কারণেই এখন টোটো চালিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে বর্তমানে। ওই একই টোটো স্ট্যান্ডের অপর এক টোটো চালক জানান, নারী দিবসের আগে বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা সুচিত্রা মুখোপাধ্যায় ওরফে ‘পুতুন দি’ মহিলাদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। অনেকেই দাবি করেন, তিনিই হলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মহিলা টোটোচালক। অজুহাত নয়, পুরুষদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঁকুড়ার রাস্তায় যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে এখনও শক্ত হাতে টোটোর হ্যান্ডেল ধরে আছেন পুতুন দি।