হিন্দি ছবি ‘পুষ্পা’ সিনেমার কায়দায় কাঠ পাচার করতে গিয়ে ধরা পরল একচক্র। যদিও ওই হিন্দ সিনেমায় দেখানো হয়েছিল ‘লাল চন্দন’ পাচার। আর এখানে উদ্ধার হয়েছে আম, শিশুর মতো বহুমূল্য কাঠ। মঙ্গলবার গভীর রাতে মালদা থেকে রাজস্থানে পাচারের আগে লরি ভর্তি বহুমূল্য কাঠ উদ্ধার করল বনদপ্তর। এদিন রাতে মালদা শহরের স্টেশন রোড সংলগ্ন এলাকা থেকেই লরি ভর্তি ওই বেআইনি কাঠ পাচার চক্রের হদিশ পায় বনদপ্তরের কর্তারা। এই ঘটনায় রাজস্থানের এক লরি চালক সহ আন্তঃরাজ্য পাচার চক্রের মোট তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে বনদপ্তর এবং ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। যার মধ্যে একজন অভিযুক্ত নিজেকে বনদপ্তরের আধিকারিক বলে ভুয়ো পরিচয় দিয়েছে কারবার চালাচ্ছিল। রীতিমতো বনদপ্তরের ভুয়ো পরিচয় দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে কাঠ পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিল ধৃত ওই ব্যক্তি বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পুলিশ ও বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত লরি চালকের নাম আমরাত সিং। তার বাড়ি রাজস্থানে। সেই লরি চালককে জেরা করে আরো দু’জন কাঠ পাচারের সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্তের নাম জানতে পারে পুলিশ এবং বনদপ্তরের কর্তারা। এরপরই পুরো বিষয়টি নিয়ে ইংরেজবাজার থানায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।
পুলিশ তদন্তে নেমে গাজোল থানা এলাকার বাসিন্দা গৌতম কর্মকার এবং ইংরেজবাজার থানা এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে। এদের বিরুদ্ধে বহুমূল্য কাঠ পাচারের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে অন্যতম এই গৌতম কর্মকার। যিনি নিজেকে বনদপ্তরের আধিকারিক পরিচয় দিয়েই কাঠ পাচারের চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ।
মালদার বিভাগীয় ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার সুজিত কুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মালদা শহরের স্টেশন রোডের কাছে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই লরিটিকে আটক করা হয়। গাড়ির কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হয় বনদপ্তরের কর্তাদের। এরপরই ওই লরি চালক আমরত সিং কে আটক করে বনদপ্তর এর কর্মীরা। রাজস্থানের বাসিন্দা ওই লরি চালকের কথায় অসঙ্গতি থাকায় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে। অভিযোগ জানানো হয় ইংরেজবাজার থানায়।
এদিকে এই ঘটনার তদন্তে নেমে এবং লরি চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও দু’জনের সন্ধান পায় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। ধৃত গৌতম কর্মকার নিজেকে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের রেঞ্জ অফিসার পরিচয় দিয়ে কাঠ পাচার করত। বনদপ্তরের সিল জাল করে এই কাজ করত ধৃত গৌতম। পুলিশ এবং বনদপ্তর মনে করছে, মালদায় এই কাঠ পাচারের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য একটি চক্র জড়িত রয়েছে। সেই চক্রের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ এবং বনদপ্তরের কর্তারা।