মহম্মদ সিরাজের বিধ্বংসী প্রথম স্পেল। সব মিলিয়ে আধডজন উইকেট। জসপ্রীত বুমরা, মুকেশ কুমারেরও অনবদ্য বোলিং। প্রথম সেশনে ভারতীয় পেসারদের দাপট। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৫৫ রানেই অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের কাছে দুর্দান্ত সুযোগ ছিল প্রোটিয়াদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেওয়ার। তা তো হলই না, উল্টে ১৫ মিনিটের ঝড়ে সব তছনছ। ভারতীয় দল এখনও অ্যাডভান্টেজ হলেও ব্যাটিং বিপর্যয় ভোলার নয়। ১১ বলের ব্যবধানে ম্যাচের রং বদলে দিলেন লুনগি এনগিডি ও কাগিসো রাবাডা। ০ রানে পড়ল শেষ উইকেট। বিদেশের মাঠে ভারতের করুণ ব্যাটিংয়ের ছবি এর আগে দেখা গিয়েছে। অতীতের বিপর্যয়কেও যেন ছাপিয়ে গেল রোহিত শর্মার টিমের ব্যাটিং-ব্যর্থতা।
ম্যাচের রং এ ভাবে বদলে যাবে, কেউই যেন প্রত্যাশা করেননি। চা বিরতির সময় ভারতের স্কোর ছিল ১১১-৪। ক্রিজে তখনও বিরাট কোহলি এবং সেঞ্চুরিয়নের সেঞ্চুরিয়ন লোকেশ রাহুল। দু-জনেই ভরসা দিচ্ছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে গেল লোকেশ রাহুলের আউটেই। আপারকাট খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন লোকেশ রাহুল। কতটা বাজে শট খেলেছেন, তাঁর মাথা ঝাঁকুনিতেই পরিষ্কার। প্রথম টেস্টে চোটের জন্য খেলতে পারেননি রবীন্দ্র জাডেজা। টেস্ট ক্রিকেটে গত কয়েক বছর তাঁর ব্যাটিং ভারতীয় দলকে ভরসা দিয়েছে। যে কারণে, বিদেশের মাটিতে এক স্পিনার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জাডেজাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফেরার টেস্টে রানের খাতাই খুলতে পারলেন না। জাডেজার আউটেই আতঙ্ক শুরু।
লুনগি এক ওভারে ০ রানে তিন উইকেট নেন। পরের ওভারে রাবাডা এসে আরও দু-উইকেট। একটি রান আউট। উল্টোদিক থেকে উইকেট পড়ায় বিরাট কোহলি গত ম্যাচের মতোই বিধ্বংসী হওয়ার চেষ্টা করেন। তাতে লাভের লাভ হয়নি। তাঁকে ফেরান রাবাডা। বিরাট কোহলি সর্বাধিক ৪৬ রান করেন। প্রথম ইনিংসে ৯৮ রানের লিড নেয় ভারত। প্রথম দিনের খেলা যে ভাবে এগচ্ছিল, তাতে এই লিড খুব একটা কম নয়। তবে একদিনেই দু-দলের ইনিংস শেষ হয়ে যাওয়ায় ম্যাচ যেন দু-দিনেই শেষের ইঙ্গিত!
দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা দারুণ শুরু করে। বিদায়ি টেস্ট খেলতে নামা ডিন এলগার এবং আর এক ওপেনার এইডেন মার্কর্যাম ভালো ব্যাটিং করছিলেন। প্রথম ইনিংসে নজর কেড়েছিলেন ভারতের তরুণ পেসার মুকেশ কুমার। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁকেই প্রথম পরিবর্ত বোলার হিসেবে আনেন রোহিত শর্মা।
রোহিতের ভরসার মর্যাদা রাখেন মুকেশ। দ্রুতই দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর প্রথম শিকার ডিন এলগার। স্লিপে ক্যাচ নেন বিরাট কোহলি। কেরিয়ারের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছিলেন মিচেল জনসনের বোলিংয়ে। কেরিয়ার শেষ হল মুকেশ কুমারের ডেলিভারিতে। প্রোটিয়া শিবিরে ধাক্কা দিয়ে সেলিব্রেশনে মেতেছিলেন মুকেশ কুমার। এমনটাই স্বাভাবিক। যদিও দ্রুতই তাঁকে মানা করেন বিরাট কোহলি। এর কারণ একেবারেই ভিন্ন। টেস্ট ক্রিকেটে শেষ বারের মতো ব্যাট হাতে ক্রিজ ছাড়ছিলেন ডিন এলগার। সেলিব্রেশন থামিয়ে একে একে ভারতীয় ক্রিকেটাররা তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। দারুণ একটা দৃশ্য তৈরি হয় নিউল্যান্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।