বর্ধমান : স্বাধীনতা দিবসের সকালেই রক্তের বন্যা জাতীয় সড়কে। বর্ধমানের ফাগুপুরে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হল দুই মহিলা সহ ১০ পুণ্যার্থীর। আহত আরও ২৫ জন যাত্রী। যার মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে মৃতদের নাম মীরা দেবী (৩০), অমরজিত কুমার (১৪), যোগী সাহানি (৬৫), নাগিনা সাহানি(৭৬), নরেশ পাসওয়ান (৪৫), কুন্দেব পাসওয়ান(৬৫), এছাড়াও অজ্ঞাত মহিলা ও ৩ জন অজ্ঞাত পুরুষ রয়েছে। তাদের নাম জানা যয়নি। তাদের বয়স ৪৫-৫৬ বছর বয়সের মধ্যে।ঘটনায় জানা গেছে, গঙ্গা সাগরে পূণ্য স্নান সেরে শুক্রবার সকাল ৭ টা নাগাদ ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে একটি যাত্রী বোঝাই ভলভো বাস দুর্গাপুরে দিকে দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় বর্ধমানের ফাগুপুরের কাছে একটি দাঁড়িয়ে থাকা ডাম্পারের পিছনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কার তীব্রতা ও তার আওয়াজ এতটাই বেশি ছিল যে আশপাশের এলাকার মানুষ চমকে ওঠেন। ছুটে আসেন সকলে ঘটনাস্থলে। দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধার কাজ শুরু করেন স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় জেলা পুলিশের একাধিক আধিকারিক সহ প্রচুর পুলিশ বাহিনী। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জখম ও আহত যাত্রীদের বাসের ভিতর থেকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। যদিও হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই দু জন মহিলা যাত্রী সহ দশ জন যাত্রীর মৃত্যু ঘটে। আহত যাত্রীদের চিকিৎসা চলছে বর্ধমান মেডিকেলে। কীভাবে এই দুর্ঘটনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে চালক নিদ্রাচ্ছন্ন হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই এই ঘটনা বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। ইতিমধ্যে পুলিশের তরফে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসের যাত্রীরা প্রত্যেকেই বিহারের বাসিন্দা। বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানে এসেছিলেন তারা। গঙ্গাসাগরে পুন্যস্নান সেরে এবার তারা বাড়ি ফিরছিলেন। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্থ বাসটিতে পাঁচ শিশু-সহ মোট ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। শুক্রবার সাতসকালে জাতীয় সড়ক ধরে যাওয়ার সময় পূর্ব বর্ধমানের নলা ফেরিঘাট এলাকায় বড়সড় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। দুর্ঘটনার জেরে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী। পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসক আয়েষা রানী বলেন,” আহতদের সবরকম চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। মৃতদের দেহ বাড়ি পৌঁছানোর ব্যাবস্থা করা হবে।”

