বমি-বমি ভাব এবং হাত কাঁপার উপসর্গ নিয়ে মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্স-এ চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন বছর কুড়ির এক কলেজ ছাত্রী। চিকিৎসকের পরামর্শে শনিবার সেখানে এমআরআই করাতে যান। আর এমআরআই করানোর সময়েই মৃত্যু হয় শ্রীপর্ণা দত্ত নামে ওই তরুণীর। এরপরই শ্রীপর্ণার বাড়ির তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন শ্রীপর্ণা। লেডি ব্রেব্রোর্ন কলেজে পদার্থবিদ্যার ছাত্রী ছিলেন শ্রীপর্ণা। আদতে আসানসোলের বাসিন্দা, পড়াশোনার কারণেই সপরিবার থাকছিলেন কলকাতায়। এরপর কোনও কারণে তাঁর হাত কাঁপছিল। মাথা ব্যথার উপসর্গও ছিল। কয়েক দিন তিনি কলেজের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসও করতে পারছিলেন না। এরপৎই শনিবার বাবার সঙ্গে ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সের আউটডোরে চিকিৎসার জন্যে আসেন। হাসপাতালের অতিরিক্ত সিইও জয়িতা বসু জানান, চিকিৎসক জ্যাকি গঙ্গোপাধ্যায় শারীরিক পরীক্ষার পরে শ্রীপর্ণাকে মস্তিষ্কের এমআরআই এবং এমআরআই অ্যাঞ্জিয়োগ্রাম করানোর পরামর্শ দেন।
হাসপাতালেরই একটি বিভাগে তাঁর সেই পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে বমি-বমি ভাব শুরু হলে তাঁকে একটি চেয়ারে বসানো হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় খিঁচুনি। মুহূর্তের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। শ্রীপর্ণার বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, আচমকা অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লেও সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ পরে আসেন চিকিৎসক আসেন। তবে ততক্ষণে হাতের বাইরে চলে গেছে সমগ্র ঘটনা। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, অসুস্থ হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুই চিকিৎসক তরুণীকে সিপিআর দেওয়া শুরু করেন। এমন অবস্থা দেখেই ‘কোড-ব্লু’ ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ কোনও প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর কার্ডিয়াক ও রেসপিরেটরি অ্যারেস্ট অর্থাৎ হৃদরোগ হলে তৎক্ষণাৎ সেই বিষয়ে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা। শ্রীপর্ণাকে জরুরি বিভাগে এনে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
সঙ্গে হাসপাতালের তরফ থেকে এও জানানো হয় যে, চিকিৎসকদের মত, তরুণীর অবস্থা জটিল ছিল বলেই তাঁকে ওই পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তরুণীর বাড়ির লোকেরা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশের বক্তব্য, ‘ওই কলেজ ছাত্রীর দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। তাতেই মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে। এর পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’